সরাইলে রক্তাক্ত রাত, ছাত্র প্রতিনিধিদের ওপর ভয়াবহ হামলা!
নিজস্ব প্রতিবেদক | ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন প্রতিনিধি মাইক্রোবাস চালক ও তাদের সহযোগীদের হামলার শিকার হয়েছেন। রবিবার রাত ১১টার দিকে উচালিয়াপাড়া মাইক্রো স্ট্যান্ডে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে ভর্তি আহত শিক্ষার্থীরা
হামলায় আহত হয়েছেন ইরফান খান, আলিফ মাহমুদ নাহিদ এবং মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম। এর মধ্যে ইরফান খান গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার খবর পেয়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসেন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা প্রতিনিধি বায়েজিদুর রহমান সিয়াম আহতদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান।
কীভাবে ঘটলো সংঘর্ষ?
রবিবার রাত ১০টার দিকে সরাইল-নাসিরনগর সড়কের ধরন্তী এলাকায় একটি মাইক্রোবাস বেপরোয়া গতিতে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা মাইক্রোবাসটির পিছু নিয়ে উচালিয়াপাড়া মাইক্রোস্ট্যান্ডে সেটি আটক করে।
ছাত্র প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশকে খবর দেন এবং গাড়িটিকে থানায় নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাইক্রোস্ট্যান্ডের লোকজন ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে একটি ঢিল পড়ে মাইক্রোবাসের গ্লাস ভেঙে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপরই মাইক্রোবাসচালক ও তাদের সহযোগীরা ছাত্র প্রতিনিধিদের উপর হামলা চালায়, যাতে অন্তত তিনজন আহত হন।
পুলিশি পদক্ষেপ ও তদন্তের অগ্রগতি
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, হামলার ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাইক্রো স্ট্যান্ডের সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
হামলার পেছনে অন্য কোনো কারণ?
এই হামলা নিছকই উত্তেজনার ফল, নাকি এর পেছনে আরও কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে—এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেছেন, ছাত্র প্রতিনিধিরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন, যা হয়তো কিছু স্বার্থান্বেষী মহল সহ্য করতে পারেনি।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে?
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তারা আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং পর্যাপ্ত তথ্য পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে দ্রুত মামলা করার আহ্বান জানিয়েছেন।