রাজনীতির মাঠে আবারও উত্তাপ! আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মুখোমুখি হচ্ছে দুই আলোচিত রাজনৈতিক শক্তি—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং গণ অধিকার পরিষদ। রাজধানীর একটি গোপন স্থানে জামায়াতের কার্যালয়ে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য এবং গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ এই তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, দলটির সভাপতি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠকে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
এই বৈঠক ঘিরে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এমন একটি বৈঠক সম্ভাব্য রাজনৈতিক জোট গঠনের পূর্বাভাস হতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এটি হয়তো একটি বৃহত্তর আন্দোলনের পূর্বপ্রস্তুতি।
বিশ্লেষকদের ধারণা, এই বৈঠকে যেসব বিষয় আলোচনায় আসতে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনের পরিকল্পনা
-
নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো নিয়ে অভিন্ন অবস্থান
-
রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির দাবি ও মানবাধিকার ইস্যু
-
পশ্চিমা বিশ্বের চাপে থাকা মানবাধিকার ইস্যুতে যৌথ বিবৃতি বা কৌশল
বিশেষ করে আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিবৃতিগুলোকে সামনে রেখে জামায়াত ও গণ অধিকার পরিষদ হয়তো যৌথভাবে আন্তর্জাতিক মিত্রদের সঙ্গে কথোপকথনের ক্ষেত্রেও একমত হতে পারে।
উল্লেখ্য, গণ অধিকার পরিষদ মূলত ছাত্র ও তরুণদের নিয়ে গঠিত একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে এক সময় বড় রাজনৈতিক শক্তি হলেও বর্তমানে নিষিদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। তাই এ ধরনের বৈঠক তাদের রাজনৈতিক পুনঃপ্রবেশের কৌশলের অংশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে একটি তরুণ প্রজন্ম-ভিত্তিক রাজনৈতিক শক্তি যদি জামায়াতের সঙ্গে মিলে কোনো বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গঠন করে, তবে সেটি দেশের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই এই বৈঠক নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছেন—এটি একটি 'অস্বাভাবিক জোট'। আবার কেউ দেখছেন—এই উদ্যোগ হতে পারে বর্তমান রাজনীতিতে বিকল্প শক্তির উত্থানের সূচনা।
গণ অধিকার পরিষদ বা জামায়াতের পক্ষ থেকে এখনো এই বৈঠকের আনুষ্ঠানিক এজেন্ডা প্রকাশ করা হয়নি, তবে দলীয় নেতারা জানিয়েছেন—‘গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়’ নিয়েই আলোচনা হবে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজকের এই বৈঠক নিঃসন্দেহে এক নতুন বার্তা দিচ্ছে। গণ অধিকার পরিষদের মতো একটি উদীয়মান শক্তির সঙ্গে জামায়াতের আলোচনা বর্তমান রাজনীতিকে আরও ঘনীভূত করবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়—এই আলোচনা কেবল মতবিনিময়েই সীমাবদ্ধ থাকে, নাকি এটি কোনো বৃহত্তর জোটের ভিত্তি গড়ে তোলে।