close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারারকে হত্যা প্রচেষ্টার খবর ভিত্তিহীন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারারকে হত্যা প্রচেষ্টার খবরকে ‘ভিত্তিহীন’ বলল সরকার। আইএসআইএস জড়িত থাকার গুঞ্জন ছড়ালেও, তথ্য মন্ত্রণালয় জনগণকে গুজবে কান না দিতে অনুরোধ জানিয়েছে।..

সিরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে রোববার সন্ধ্যায় এক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে—দেশটির প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারারের ওপর নাকি প্রাণঘাতী হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে এই খবরকে একেবারেই ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র।

সরকারি বার্তা সংস্থা সানা-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, কিছু আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম দাবি করে যে, প্রেসিডেন্ট শারার যখন দারা সফরে ছিলেন, তখনই সিরিয়ার সেনাবাহিনীর একটি অংশ তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। আরও বিস্ময়কর হলো, এসব ষড়যন্ত্রে নাকি তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটি জড়িত ছিল—এমনটিও প্রচার করা হয়েছে।

তবে সিরিয়ার সরকারি মহলের দাবি, এসব ‘উদ্ভট ও ভিত্তিহীন গুজব’ ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করার একটি সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা।

কিছু প্রতিবেদন বলছে, দারায় প্রেসিডেন্টের সফরের আগের দিন একটি আইএসআইএস সংশ্লিষ্ট সেল সক্রিয় ছিল। ওই সেলের নেতৃত্বে ছিল দারার একজন চরমপন্থী ব্যক্তি, যিনি আগে থেকেই সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। পরিকল্পনা ছিল প্রেসিডেন্টের কনভয়ের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করা।

তবে সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী এই পরিকল্পনা আগেই ধরে ফেলে। কথিত ওই সেলের প্রধানসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে কিছু প্রতিবেদনে।

লেবাননের একটি সংবাদপত্র ‘ল’ওরিয়েন্ট-লে জুর’-এর বরাত দিয়ে সিরিয়া টিভি জানায়, প্রেসিডেন্ট শারার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে অন্তত দুইবার তাঁর ওপর প্রাণনাশের চেষ্টা হয়েছে। সর্বশেষ হামলার প্রচেষ্টা নাকি হয়েছিল চলতি বছরের মার্চ মাসে।

তাদের দাবি, এই হত্যাচেষ্টার পেছনে ছিল আন্তর্জাতিক চরমপন্থী সংগঠন আইএসআইএস এবং হায়াত তাহরির আল-শাম, যারা সিরিয়ার বর্তমান সরকারকে উৎখাত করতে চায়। ওই সংগঠনগুলো এখন আবারো নিজেদের পুনর্গঠন করছে এবং আগের যোদ্ধাদের একত্রিত করে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলছে।

এসব দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে সিরিয়ার তথ্য মন্ত্রণালয় সোজাসাপ্টা ভাষায় জানিয়েছে—“গুজব এবং মিথ্যা তথ্য প্রচার করে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। এটি একটি কৌশলগত প্রচারণা যুদ্ধ।”

তারা নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—যেকোনো তথ্য যাচাই না করে বিশ্বাস করবেন না এবং সরকারি বা নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়া গুজবে কান দেবেন না।

সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি জটিল হলেও, সরকার এ ধরনের গুজবকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে প্রেসিডেন্ট শারারের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। তাই তাঁকে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল করতে হত্যাচেষ্টা গুজবের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে, যা একটি সাধারণ ‘সাইকোলজিক্যাল অপারেশন’ বা psy-ops হতে পারে।

এই পুরো ঘটনার পেছনে প্রকৃত সত্য কী, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত—আঞ্চলিক শক্তিগুলোর মধ্যকার ঠাণ্ডা লড়াই এবং চরমপন্থীদের তৎপরতা সিরিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে চলেছে।

এই মুহূর্তে সিরিয়া সরকার ‘সতর্ক এবং প্রস্তুত’ অবস্থানে আছে। রাজনৈতিক মঞ্চে বড় ধরনের নাটকীয় মোড় আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ। তবে দেশটির জনগণ এখনো আশাবাদী—গুজব নয়, সত্যের পথেই আগাবে সিরিয়া।

Tidak ada komentar yang ditemukan