মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতার আগুন জ্বলে উঠছে। একের পর এক ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হাসাকা প্রদেশের কাসরুক এলাকায় অবস্থিত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। রুশ সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তি ও ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা মেহের নিউজ জানিয়েছে, এই হামলা সরাসরি মার্কিন বাহিনীকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে।
এই হামলার বিষয়ে এখনও বিস্তারিতভাবে জানানো হয়নি। কোথা থেকে বা কারা এই হামলা চালিয়েছে—তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে স্থানীয় পর্যায়ে এটি ছিল অত্যন্ত লক্ষ্যভেদী এবং পরিকল্পিত একটি আঘাত। এই আঘাতের পর, সিরিয়া ও আশপাশের অঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর মাত্র একদিন আগেই, ২২ জুন রাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল। এসব স্থাপনার মধ্যে ছিল নাতানজ, ফোরদো এবং ইসফাহান। ওয়াশিংটন দাবি করেছে, এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস বা অন্তত গুরুতরভাবে দুর্বল করে দেওয়া।
এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। ইরান এই হামলাকে সরাসরি তাদের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হিসেবে দেখছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি কড়া ভাষায় বলেন, “কূটনীতির দরজা সবসময় খোলা থাকা উচিত, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এখন সময় এসেছে প্রতিরোধের।” তিনি আরও বলেন, ইরান তার নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়াও নীরব থাকেনি। মস্কো যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তীব্র সমালোচনা করে একে আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের চরম লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছে। রাশিয়া আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা (IAEA)-এর কাছ থেকে ‘সত্যনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ প্রতিক্রিয়া’ প্রত্যাশা করেছে। মস্কোর মতে, এমন আক্রমণ শুধু অঞ্চলকেই নয়, পুরো বিশ্বের স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে নতুন হামলার ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পরস্পরের ওপর পাল্টা হামলা এবং কূটনৈতিক সংকট আগামী দিনগুলোতে আরও জটিল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি একটি "পুনরুত্থিত ছায়াযুদ্ধের সূচনা", যেখানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সংঘাতে না গিয়েও একে অপরকে চাপে রাখছে অঞ্চলীয় সংঘাত ও সামরিক অভিযানের মাধ্যমে।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			