সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের ব্যস্ততম চৌরাস্তা মোড়ে প্রকাশ্য দিবালোকে আব্দুর রহমান রিয়াদ (১৮) নামের এক কলেজছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করেছে একদল দুর্বৃত্ত। রোববার বিকেলে পুলিশ ফাঁড়ির মাত্র কয়েক গজ দূরে ঘটে যাওয়া এই নৃশংস ঘটনায় শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইতোমধ্যে তিনজনকে আটক করেছে।
নিহত আব্দুর রহমান রিয়াদ শহরের সয়াধানগড়া খানপাড়া মহল্লার রেজাউর রহমানের ছেলে। তিনি সিরাজগঞ্জ ইসলামিয়া সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ১৫-২০ জন সশস্ত্র যুবক ধারালো চাপাতি ও ছুরি নিয়ে শহরের বাজার স্টেশনগামী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার গতিরোধ করে। অটোরিকশায় যাত্রী হিসেবে থাকা আব্দুর রহমান রিয়াদকে তারা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে বীরদর্পে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রোকনুজ্জামান নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, "নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের গভীর ক্ষত ছিল। মূলত অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।"
হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, শার্ট ও জ্যাকেট পরিহিত একদল যুবক প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে অটোরিকশা থামিয়ে একজনকে কোপাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে পথচারীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার পর রাতেই হাসপাতালে নিহতের স্বজনদের সান্ত্বনা দিতে যান জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুলিশের একাধিক দল অপরাধীদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অভিযান) হাফিজুর রহমান বলেন, "আমরা ইতোমধ্যে তিনজনকে আটক করেছি। বাকি অভিযুক্তদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে।"



















