ভারত বাঁধ দিলে রক্ষা নেই—সিন্ধু নদে ‘যুদ্ধের হুমকি’ পাকিস্তানের!
দুই প্রতিবেশীর মধ্যে পুরনো বিদ্বেষ যেন আবারও নতুন রূপে সামনে এলো। একদিকে কাশ্মীরের পেহেলগাম অঞ্চলে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২৬ জন, অন্যদিকে তার রেশ ধরে সিন্ধু নদ ঘিরে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এক বিস্ফোরক বক্তব্যে বলেন,
"ভারত যদি সিন্ধু নদে কোনো ধরনের কাঠামো নির্মাণের চেষ্টা করে, আমরা তা গুঁড়িয়ে দেব। এটা শুধু কূটনৈতিক ইস্যু নয়—জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন।"
এই বক্তব্যে আবারও প্রমাণিত হলো, দুই দেশের সম্পর্ক এখন আগুনে ঘি ঢালার পর্যায়ে পৌঁছেছে।
কাশ্মীর হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের কড়া পদক্ষেপ
কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে। ভারত এই ঘটনার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করলেও, এখন পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। তবে প্রতিক্রিয়ায় ভারত বেশ কয়েকটি একতরফা পদক্ষেপ নেয়—
-
সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে
-
পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে
-
ওয়াঘা-অটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেয়
এতে স্পষ্ট হয়, ভারত আগ্রাসী কৌশলে এগোচ্ছে।
পাকিস্তানের পাল্টা কৌশল: কূটনীতি ও হুঁশিয়ারির সমাহার
ভারতের এমন সিদ্ধান্তে পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও বসে থাকেনি।
-
ভারতীয় কূটনীতিক ও সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কার করে
-
শিখ তীর্থযাত্রী ছাড়া সব ভারতীয়ের ভিসা বাতিল করে দেয়
এছাড়া খাজা আসিফ জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ অনুষ্ঠানে বলেন,
“পানি আটকে রাখা বা জনগণকে তৃষ্ণার্ত করে মারা—এটাও যুদ্ধ। শুধু গুলি নয়, উন্নয়ন প্রকল্পের আড়ালেও আগ্রাসন হতে পারে।”
মোদি সরকারের উদ্দেশ্য ‘নাটক’?
পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অভিযোগ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই উত্তেজনা তৈরি করছেন নির্বাচনী সুবিধা নেওয়ার জন্য। তিনি বলেন,
“আন্তর্জাতিক মহল ভারতকে সমর্থন দেয়নি, বরং তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।”
খাজা আসিফ স্পষ্টভাবে বলেন, তারা এখনই সামরিক যুদ্ধ নয়, বরং সিন্ধু পানি চুক্তিকে হাতিয়ার করে আন্তর্জাতিক ফোরামে এই ইস্যু তুলবেন।
শেষ কথা: বাঁধ মানেই যুদ্ধ!
তিনি কড়া হুঁশিয়ারিতে জানান,
“ভারতের জন্য এই চুক্তি লঙ্ঘন করা সহজ হবে না। আমরা প্রতিরোধে যাব—সব ধরনের কৌশলগত পন্থা নেওয়া হবে।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে পাকিস্তান স্পষ্ট করে দিল, সিন্ধু নদে বাঁধ নির্মাণ শুধু প্রকৌশল নয়, রাজনৈতিক বারুদের স্ফুলিঙ্গ—যা যে কোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে।
ভারত বিচ্ছিন্ন, চীন-পাকিস্তান একজোট?
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে আন্তর্জাতিক পরিসরেও নতুন অক্ষ তৈরি হচ্ছে। চীন ও পাকিস্তান একজোট হয়ে ভারতকে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় রাষ্ট্রের অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
সিন্ধু নদ নিয়ে এমন উত্তেজনা শুধু দুই দেশের নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। এখন দেখার বিষয়, উত্তপ্ত পানি গড়িয়ে পড়ে কি-না রক্তে!