ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী সেনারবাদী গ্রামে যৌথ বাহিনীর চাঞ্চল্যকর অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য, ভারতীয় পণ্য এবং ইলেকট্রনিকস সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে দুই নারীসহ চোরাচালান ও মাদক চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করা হয়েছে, যা এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সল উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ বিজিবি) সদস্য, আখাউড়া থানা পুলিশ ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। অভিযান চলে বুধবার (১৮ জুন) বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে।
উপজেলা প্রশাসন ও বিজিবি সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় সেনারবাদী গ্রামে ভারতীয় পণ্য এবং মাদক পাচার করা হচ্ছে। খবর পেয়েই প্রশাসন পরিকল্পনা করে একটি সম্মিলিত অভিযান। আর তাতেই উঠে আসে ভয়ংকর চিত্র।
অভিযানের সময় অভিযুক্ত চক্র সদস্যরা প্রথমেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলার চেষ্টা করে। তবে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা তাদের পেশাদার ও সাহসিক অবস্থানে সেই হামলা প্রতিহত করেন।
অভিযানে উদ্ধার হয় প্রায় ৩,৫০০ পিস ইয়াবা, ৬০০টি ট্যাপেনডোল ট্যাবলেট, ৩২টি মোবাইল ফোন (যার মধ্যে ১৩টি অ্যান্ড্রয়েড), ২টি ল্যাপটপ, ৬টি সিসি ক্যামেরা, ২টি পাওয়ার ব্যাংক, ও মাদক বিক্রির নগদ ২১ হাজার টাকা।
এইসব জিনিসের উপস্থিতি দেখে ধারণা করা হচ্ছে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরেই চোরাচালান ও মাদক বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত।
আটক হওয়া পাঁচ জনের মধ্যে রয়েছেন—
-
জনি মিয়া (২২),
-
মুর্শেদ মিয়া (৩২),
-
ইদন মিয়া (২৫),
-
মোছা. আইমন আক্তার (২৫),
-
স্বপ্না বেগম (২৮)।
তাঁরা সকলেই আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী সেনারবাদী এলাকার বাসিন্দা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সল উদ্দিন বলেন,অভিযানের সময় আমাদের উপর হামলার চেষ্টা হয়, তবে আমরা সতর্ক থাকায় কেউ হামলা চালাতে পারেনি। অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক ও প্রযুক্তি সামগ্রীসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এই অভিযানের মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো এখন মাদকের রুটে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে স্থানীয় কিছু চক্র নিয়মিত এই অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের এমন অভিযান এ ধরনের অপরাধ দমন ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।