close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর ঘিরে স্থানীয়দের বি'ক্ষো'ভ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সিলেটের জাফলংয়ে পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয় জনতার তীব্র বিক্ষোভের মুখে পড়েন পরিবেশ ও জ্বালানি উপদেষ্টা। অবৈধ পাথর উত্তোলনের বিরোধিতা করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে গাড়িবহর ঘিরে ফেলেন। শেষমেশ পুলিশ এস..

বাংলাদেশের পর্যটন ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর স্থান জাফলং এবার খবরের শিরোনামে এসেছে পরিবেশ রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপদেষ্টার বিরুদ্ধে স্থানীয় জনতার বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে।
শনিবার (১৪ জুন) সকালে জাফলং ইসিএ (Ecological Critical Area) এলাকা পরিদর্শনে আসেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। তাঁদের উপস্থিতি ঘিরেই শুরু হয় স্থানীয়দের ক্ষোভ ও বিক্ষোভ।

জানা যায়, সকাল ১১টার দিকে বল্লাঘাট পিকনিক সেন্টার থেকে স্পিডবোটযোগে জাফলংয়ের বিভিন্ন পাথর উত্তোলন এলাকা ঘুরে দেখেন উপদেষ্টারা। এই পরিদর্শনের সময় উপদেষ্টাদ্বয় পরিবেশগত সুরক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধে তৎপর হওয়ার কথা জানান।

এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই, ফেরার পথে জাফলং বল্লাঘাট (মামার দোকান) এলাকায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্লোগান দেন— "ভুয়া ভুয়া", এবং উপদেষ্টাদের গাড়িবহর ঘিরে সড়ক অবরোধ করেন। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে পাথর উত্তোলন তাদের জীবিকার একমাত্র উৎস হলেও সরকারি কড়াকড়ি আর ‘উপদেষ্টাদের হঠাৎ হস্তক্ষেপ’ তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।

বিক্ষোভের সময়ের পরিবেশ ছিল উত্তপ্ত, তবে সঠিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হস্তক্ষেপ করায় বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
জাফলং ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সাদত হোসেন বলেন,

“উপদেষ্টারা পরিবেশ রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। তবে স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল। আমরা দ্রুত উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি।”

পরে উপদেষ্টারা বল্লাঘাট পিকনিক সেন্টার মাঠে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন,

“ইসিএ এলাকায় অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন কাজ কেউ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

এই সময় উপস্থিত ছিলেন:

  • সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. শের মাহমুদ মুরাদ

  • সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবর রহমান

  • গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী

  • গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ সরকার তোফায়েল, প্রমুখ।

স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “পাথরই আমাদের রুটি-রুজির উৎস। হঠাৎ করে উঁচু পদে বসা লোকেরা এসে সব বন্ধ করে দিয়ে যান। আমাদের কথাও তো শোনা উচিত।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উন্নয়ন এবং পরিবেশ রক্ষার মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করাটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে প্রশাসনের একপক্ষ পরিবেশ রক্ষায় সচেতন, অন্যদিকে স্থানীয়দের জীবিকা টিকিয়ে রাখাও জরুরি।

জাফলংয়ের এই ঘটনাটি সামান্য কোনো প্রশাসনিক সফর নয়, বরং এটি স্থানীয় বাস্তবতা ও পরিবেশ রক্ষার মধ্যে সংঘর্ষের প্রতিচ্ছবি। সরকারের উচিত হবে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করে বাস্তবমুখী ও সহনশীল পরিকল্পনা নেওয়া, যাতে প্রকৃতিও বাঁচে, মানুষও বাঁচে।

کوئی تبصرہ نہیں ملا


News Card Generator