close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

সিলেট সীমান্তে ফের ৮০ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সিলেট সীমান্তে ফের বড় ধরনের চোরাচালান রোধ করেছে বিজিবি। ভারত থেকে আনা ৮০ লাখ টাকার পণ্য ও গরু জব্দ, চলছে নিয়মিত অভিযান।..

সিলেট সীমান্তে ফের বড় ধরনের চোরাচালান রোধে সাফল্য দেখিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। একক অভিযানে প্রায় ৮০ লাখ টাকার ভারতীয় চোরাই পণ্য ও গবাদিপশু জব্দ করেছে বাহিনীটি। সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির এই টানা অভিযানকে সীমান্তবাসীরা স্বাগত জানাচ্ছেন।

বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধীন প্রতাপপুর, সংগ্রাম, শ্রীপুর, বিছনাকান্দি ও সোনালীচেলা বিওপি’র বিভিন্ন টহল দল মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত একযোগে এসব অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান চলাকালে সীমান্ত এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ি, রূপচর্চার সামগ্রী (বিশেষ করে চোরাই বিদেশি ক্রিম), চকলেট, গরু, বাটার, মেহেদি, টমেটো ও চিনি জব্দ করা হয়। এসব পণ্যের বাজারমূল্য আনুমানিক ৮০ লাখ ৮৫ হাজার ৫৭০ টাকা বলে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এছাড়াও চোরাচালানের আড়ালে অবৈধভাবে সীমান্ত নদী থেকে পাথর উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত একাধিক নৌকাও আটক করে বিজিবি। নদীর পরিবেশ ধ্বংস করে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা প্রশংসিত হয়েছে সচেতন মহলের কাছে।

৪৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সাংবাদিকদের জানান, “সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাত-দিন আমাদের টহল দল সতর্ক অবস্থায় থাকে। এবারও নিয়মিত টহলের সময় এই বিশাল পরিমাণ পণ্য জব্দ করা সম্ভব হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “জব্দকৃত সব চোরাই পণ্যের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। কোনও চোরাকারবারিকে ছাড় দেওয়া হবে না।”

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারাও বিজিবির নিয়মিত অভিযানে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা ফারুক আহমদ বলেন, “প্রতিদিন নতুন করে ভারতীয় পণ্য আসত। এতে স্থানীয় বাজারেও অস্থিরতা তৈরি হচ্ছিল। বিজিবি এখন শক্ত অবস্থানে আছে, আমরা এই অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে চোরাইপণ্য প্রবেশ বন্ধ করা গেলে দেশের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাবে এবং বৈধ আমদানি-রপ্তানির প্রতি নির্ভরশীলতা বাড়বে। একই সঙ্গে চোরাচালান নির্ভর অর্থনীতির ওপর চাপ কমবে।

চোরাই গরু প্রবেশের ফলে দেশের খামারিরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন বলে জানান একজন খামারি। “আমরা নিজেরা গরু লালন করি কিন্তু ভারতীয় গরু আসায় দাম পড়ে যায়। বিজিবির এই পদক্ষেপ আমাদের জন্য আশার আলো,” তিনি বলেন।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিজিবি বিভিন্ন সময়ে সিলেট সীমান্তে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বড় ধরনের চোরাচালান প্রতিরোধে সফল হয়েছে। এর ফলে বিজিবির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা যেমন বেড়েছে, তেমনি সীমান্তজুড়ে তৈরি হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা বলয়।

বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেবল ভারতীয় পণ্য নয়, মাদক, অবৈধ অস্ত্র ও মানবপাচার রোধেও তারা এখন আরও বেশি সক্রিয়। আধুনিক প্রযুক্তি, ড্রোন নজরদারি এবং স্থানীয় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

এই ধারাবাহিক ও কঠোর নজরদারি যদি চলতে থাকে, তবে সীমান্ত হয়ে চোরাচালান করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মত বিশ্লেষকদের।

Aucun commentaire trouvé