জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে গাইবান্ধা পৌরপার্কের শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। তিনি জানান, “জুলাই আন্দোলন শুধুমাত্র ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য হয়নি। এটি ছিল এক দলের ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে আরেক দলের ফ্যাসিস্ট শাসনে রূপান্তরের বিরোধিতা। সাধারণ ছাত্র-জনতা রক্ত ঝরিয়ে রাজপথে নেমেছিল অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই আন্দোলন আমাদের ভয়ের বন্দিশ্রেণী ভেঙে দিয়েছে, যার ফলে আমরা নির্ভয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছি। এই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বৈষম্যের অবসান ঘটাতে একযোগে আওয়াজ তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, আমরা নতুন দেশ গড়তে বদ্ধপরিকর। নতুন দেশের সেই রূপ হবে যেখানে ধর্ম, বর্ণ বা জাত নির্বিশেষে সবাই স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারবে এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে।
এদিকে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে কেন্দ্রীয় সদস্য ফিহাদুর রহমান দিবস বলেন, “গাইবান্ধায় ইপিজেড ও শিল্প কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। একই সঙ্গে, গাইবান্ধা জেলা জেনারেল হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।”
এনসিপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ আরও অনেকে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। তারা সকলেই নতুন দেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে মানুষের ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানান।
এর আগে সকালে রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে এনসিপি নেতৃবৃন্দ গাইবান্ধার প্রবেশদ্বারে স্থানীয় নেতাদের স্বাগত গ্রহণ করেন। এরপর তারা গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় একটি পথসভায় অংশ নেন। বিকেলে গাইবান্ধা শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশ শেষে সড়ক পথে পলাশবাড়ীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি আগামী মাসব্যাপী দেশের সব জেলায় চলবে, যেখানে সাধারণ মানুষের সমস্যা, দাবী ও July আন্দোলনের বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
নাহিদ ইসলাম ও তার দলের নেতারা বিশ্বাস করেন, এই পদযাত্রা চলমান রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করবে এবং দেশের ন্যায্য অধিকারের জন্য সংগ্রামের নতুন অধ্যায় শুরু করবে।