close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

শুধু ফ রদোতে ই ১২টি ‘বাং কার বা স্টার’ বো মা ফেলেছে যু ক্তরা ষ্ট্র....

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ হামলা, ফরদোতে ফেলা হয় ১২টি 'বাংকার বাস্টার' বোমা। উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ছায়া ঘনিয়ে আসছে।..

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার কেন্দ্রে এবার সরাসরি ঝাঁপিয়ে পড়ল যুক্তরাষ্ট্র। রবিবার ভোররাতে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। লক্ষ্যবস্তু ছিল—নাতাঞ্জ, ফরদো এবং ইসফাহান পারমাণবিক কেন্দ্র। আর এর মধ্যেই সবচেয়ে ভয়াবহ আঘাত হানা হয়েছে ইরানের শক্তিশালী গোপন কেন্দ্র ফরদোতে, যেখানে একাই ফেলা হয়েছে ১২টি 'বাংকার বাস্টার' বোমা।

এই বোমা হামলা চালিয়েছে ছয়টি বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান। মার্কিন সামরিক সূত্র জানায়, এই অত্যাধুনিক বিমানগুলো মাটির অনেক গভীরে থাকা লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে পারদর্শী। এমন প্রযুক্তির বোমা সাধারণ কোনো সামরিক অভিযানে ব্যবহৃত হয় না—এই মাত্রার হামলা ইরানের জন্য শুধু বার্তা নয়, একপ্রকার হুঁশিয়ারি।

এছাড়াও মার্কিন নৌবাহিনীর একটি সাবমেরিন থেকে ছোঁড়া হয়েছে ৩০টি টিএলএএম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। এগুলো আঘাত হেনেছে নাতাঞ্জ এবং ইসফাহান স্থাপনাগুলিতে। এর পাশাপাশি আরও একটি বি-২ বিমান নাতাঞ্জে গিয়ে ফেলেছে দুটি বাংকার বাস্টার বোমা।

হামলার খবর গোপন না রেখে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে নিশ্চিত করেছেন এই হামলার বিষয়টি। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর গোটা বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

এরপর ইরানও স্বীকার করে নেয় যে, তাদের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সত্যিই হামলা চালানো হয়েছে। দেশটির পারমাণবিক শক্তি সংস্থা ‘অ্যাটমিক এনার্জি অরগানাইজেশন অব ইরান (এইওআই)’ এক বিবৃতিতে জানায়, এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন এবং পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (NPT) লঙ্ঘনের সামিল।

তবে, ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ একটি ভিন্ন সুরে বলেছে—যুক্তরাষ্ট্র যেসব স্থাপনায় হামলার দাবি করছে, সেখানে কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থ মজুত ছিল না। এর মাধ্যমে ইরান চেষ্টা করছে পরিস্থিতি শান্ত রাখার, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই বক্তব্য যুদ্ধের বাস্তবতা এড়ানোর কৌশলমাত্র।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান একসঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বোমা বহন করতে পারে। এই বিশাল ওজনের ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা মূলত ভূগর্ভস্থ শক্তিশালী কাঠামো ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়। ফরদো পারমাণবিক কেন্দ্র মাটির অনেক গভীরে অবস্থিত—যার জন্য এই বোমাগুলোই ছিল উপযুক্ত অস্ত্র।

বিশ্লেষকদের মতে, এতো বড়সড় হামলার মানে ইরানকে সরাসরি বার্তা দেওয়া—তাদের পরমাণু কর্মসূচি আর নজরদারির বাইরে নয়। এমনকি, হামলার ধরন ও সময় দেখে বোঝা যায়, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত একটি যৌথ কৌশল, যাতে ইসরায়েলের আগের হামলার ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েল প্রথম ইরানের ওপর বিমান হামলা চালায়। এরপর ইরানও পাল্টা আক্রমণ করে। এই ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন ভয়াবহ হস্তক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন যুদ্ধের শঙ্কা তৈরি করেছে।

বিশ্ব রাজনীতি পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণ মানেই ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এখন আর শুধু দুটি দেশের বিষয় নয়—এটি বিশ্বশক্তিগুলোর মুখোমুখি অবস্থানে রূপ নিচ্ছে।

বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান দু’পক্ষের এমন সামরিক তৎপরতায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, এবার হয়তো যুদ্ধ অনিবার্য। যদি পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটে, তবে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়—পুরো বিশ্বই এই সংঘাতের আঁচ টের পাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা শুধু ইরানের পারমাণবিক শক্তির বিরুদ্ধে নয়, এটি এক রাজনৈতিক বার্তা—যেখানে পরমাণু অস্ত্র, আন্তর্জাতিক আইন ও বিশ্বশান্তি সব কিছুই প্রশ্নের মুখে। ফরদোতে ১২টি বাংকার বাস্টার বোমার বিস্ফোরণ যেন শুধুই শুরু—পরবর্তী অধ্যায় আরও ভয়াবহ হতে পারে।

کوئی تبصرہ نہیں ملا


News Card Generator