বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। তবে এই শ্রমশক্তি রপ্তানি খাত এখন এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে দালালচক্রের দৌরাত্ম্য এবং প্রতারণার কারণে প্রতি বছর হাজার হাজার বিদেশগামী মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি এখনই এসব অসাধু দালাল ও প্রতারক চক্র থেকে বিদেশগামীদের রক্ষা করা না যায়, তবে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে।
একটি সফল অভিবাসন প্রক্রিয়ার প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা দালালের জাল। এই চক্রগুলো নিরীহ বিদেশগামীদের উচ্চ বেতনের মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সর্বস্ব বিক্রি করে বিদেশে যাওয়ার পর কর্মীরা প্রতিশ্রুত কাজ পান না অথবা অবৈধ হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেন। এর ফলে শুধু যে কর্মীটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তা নয়, বরং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি উত্তরণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে আরও কঠোর হওয়ার দাবি উঠেছে। সচেতন মহলের মতে, বিদেশগামীদের জন্য ওয়ান-স্টপ সার্ভিস নিশ্চিত করা এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের ভূমিকা পুরোপুরি বন্ধ করা জরুরি। পাশাপাশি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত তথ্য সেবাকেন্দ্রগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষ দালালের ওপর নির্ভর না করে সরাসরি সঠিক তথ্য পায়। প্রতারকদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করাই হবে এই খাতের বর্তমান সমাধান।
বলা হচ্ছে, শ্রমবাজারের এই অস্থিরতা কাটাতে পারলে এবং কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে দেশ থেকে আরও বেশি দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি সম্ভব হবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি দেশের বেকারত্ব দূরীকরণেও বড় ভূমিকা রাখবে এই খাত।



















