মহান বিজয়ের মাসের আনন্দ যখন দেশজুড়ে, ঠিক তখনই শরীয়তপুরের সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরে আগুন দেওয়ার ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। সোমবার গভীর রাতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান খানের কবরের ওপর পাটখড়ি ও কাঠ জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দেয়। মঙ্গলবার সকালে নিহতের স্ত্রী মাহফুজা বেগম কবরের পাশে পোড়া ছাই ও ধোঁয়া দেখতে পেলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এই ঘটনায় পুরো জেলাজুড়ে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান খান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। ২০১০ সালে মৃত্যুর পর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। দীর্ঘ ১৪ বছর পর তার কবরের ওপর এমন ন্যক্কারজনক হামলাকে কেবল একটি অপরাধ নয়, বরং রাষ্ট্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। নিহতের মেয়ে আফরোজা আক্তার জানান, এই ঘটনার পর তাদের পরিবার গভীর আতঙ্কে রয়েছে এবং তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম এবং জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা ঘটনাটি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম জানিয়েছেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল এই ঘটনার প্রতিবাদে সভা ডেকেছে এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। বিজয়ের মাসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের কবরে এমন অবমাননা সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনেও গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।



















