close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে ছাত্র রাজনীতির উত্তেজনায়। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ থেকে শুরু হওয়া উত্তেজনা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় রূপ নেয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
হাসনাতের কড়া হুঁশিয়ারি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ কুয়েটের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “যে ছাত্রলীগ হয়ে উঠতে চাইবে, তার পরিণতি ছাত্রলীগের মতোই হবে।” তার এই মন্তব্য মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
কীভাবে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ল?
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে শোভাযাত্রা বের করেন। তারা ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটাই, রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই’—এমন বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করেন। শোভাযাত্রাটি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে পৌঁছালে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় এবং একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়।
কুয়েটের পকেট গেটের বাইরে বহিরাগতরা একটি পক্ষের হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বলে জানা যায়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালীন আহতদের একের পর এক অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিতে দেখা যায়। এ পর্যন্ত ৪টি অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বহিরাগতদের হামলা ও ভাঙচুর
সংঘর্ষের মধ্যেই বিএনপি সমর্থিত বহিরাগতরা কুয়েটের পকেট গেটের বাইরে এক ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ক্যাম্পাসের ভেতরে ফেলে যায়। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে ওঠে যখন বহিরাগতরা কুয়েটের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা পাল্টা হামলা চালিয়ে কয়েকটি বাড়িতে আক্রমণ করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ
কুয়েট ক্যাম্পাসজুড়ে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। খানজাহান আলী থানার ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, “ছাত্রদের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।” তবে এখনো পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক হয়নি বলে জানান তিনি।
কুয়েটের ভবিষ্যৎ কি?
এই সংঘর্ষ কুয়েটের রাজনীতির ভবিষ্যতের ওপর কী প্রভাব ফেলবে, তা এখনই বলা কঠিন। শিক্ষার্থীরা দাবি তুলছেন, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যদিকে, ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবি, তারা ক্যাম্পাসে নিজেদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চায়। প্রশাসন কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এমন উত্তাল পরিবেশে কুয়েট শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে কীভাবে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে এবং প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেবে, তা নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
לא נמצאו הערות