close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
মাদক সয়লাব দেশে, থমকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
সারা দেশে মাদকের ভয়াবহতা এখন চোখে পড়ার মতো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নির্লিপ্ততায় মাদক সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। মাদকসেবীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে, বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে। গত চার বছরে প্রায় ৪০ লাখ নতুন মাদকসেবীর যোগ হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে দেশে মোট মাদকসেবীর সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ই-সিগারেটের মতো মাধ্যমও মাদকের আসক্তি বাড়াচ্ছে।
তরুণ প্রজন্মের সংকট
দেশের ৩০ শতাংশ যুবকের একটি বড় অংশ এখন মাদকে জড়িয়ে পড়েছে। মাদকাসক্তির কারণে পরিবারগুলোতে বাড়ছে অশান্তি। কিছু ক্ষেত্রে অভিভাবকদেরই সন্তানদের পুলিশের হাতে তুলে দিতে হচ্ছে। এমনকি সন্তানকে খুন করতেও বাধ্য হয়েছেন কেউ কেউ।
রাজধানীর জুরাইনে এক বাস হেলপার জানান, ইয়াবা এখন স্কুল-কলেজের ছাত্ররাও বিক্রি করে। "কিছুদিন পর দেখবেন দোকানে দোকানেও ইয়াবা পাওয়া যাচ্ছে," বলেন তিনি।
ক্যাম্পাসে মাদকের আসর, প্রশাসনের নীরব ভূমিকা
বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদকের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে কোকেন, গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ নানা মাদকের বিস্তার ঘটাচ্ছে। ছাত্রীদের মধ্যেও মাদকের আসক্তি বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকেরা।
রাজধানীর একটি কলেজের শিক্ষিকা বলেন, “ছেলেমেয়েরা এখন আমাদের সামনেই গাঁজা টানে। কিছু বললে অপমানিত হতে হয়।”
মাদকাসক্তির ভয়াবহ পরিণতি
মাদকের কারণে অভিভাবকদের দুঃসহ অভিজ্ঞতার নজির রয়েছে বহু। ২০২৩ সালে গাজীপুরে এক বাবা বাধ্য হয়ে মাদকাসক্ত ছেলেকে হত্যা করেন। অন্যদিকে, জামালপুর, ময়মনসিংহ, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য মা-বাবা তাদের সন্তানদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
সমাধানে সংস্কার কমিশনের দাবি
মাদক ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) প্রেসিডেন্ট ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেছেন, “মাদকাসক্তদের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বাড়ছে। দেশের যুবসমাজকে বাঁচাতে না পারলে জাতি এক মহাসংকটে পড়বে।” তিনি মাদক নিয়ন্ত্রণে সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি তুলেছেন।
মাদক নির্মূলে সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি
পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাদক নির্মূলে কাজ করলেও তাতে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। জামালপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, "মাদক নির্মূলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে এই ভয়াবহতা থেকে উত্তরণ ঘটাতে।"
মাদকের বিস্তার রোধে জরুরি পদক্ষেপ এবং সচেতনতার প্রয়োজন। সরকার, প্রশাসন, এবং জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগই পারে তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে।
نظری یافت نشد