close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

শেখ সাহেবপাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন দেশ তিনি গড়তে চাননি: আযমী..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আজমের ছেলে আমান আযমীর দাবি, শেখ মুজিব ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠাননি, বরং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্বই ছিল তার লক্ষ্য। এমন মন্তব্যে আবারও বিতর্কের ঝড়।..

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক লক্ষ্য ও স্বাধীনতা ঘোষণাকে ঘিরে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আজমের পুত্র এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন, শেখ সাহেব কখনোই বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি, বরং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন।

“প্রসঙ্গ: স্বাধীনতার রূপকার” শিরোনামে দেওয়া পোস্টে আমান আযমী স্পষ্টভাবে লিখেছেন, “২৫ মার্চ রাতে শেখ সাহেব কোনো বার্তা পাঠাননি। বরং, বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলোতে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি স্বাধীনতা চান না।” তিনি এই বক্তব্যকে ‘ডকুমেন্টেড প্রমাণ’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং জানান, “এই দাবি মিথ্যা যে তিনি তারবার্তা পাঠিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।”

তিনি আরও বলেন, “সবাই জানেন যে শেখ সাহেব পাকিস্তানের অখণ্ডতার পক্ষে ছিলেন এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। এটি এমন একটি বিষয়, যেটি আজও কেউ দলিল দিয়ে অস্বীকার করতে পারেননি।”

স্বাধীনতা ঘোষণা নিয়ে সংশয়

আযমী বলেন, ২৫ মার্চ রাতে যখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালায়, তখন রেডিও ও টেলিফোন ভবন ইতোমধ্যেই দখলে নেয়া হয়েছিল। ফলে, শেখ মুজিব চাইলে ‘স্বাধীনতার বার্তা’ চট্টগ্রামে পাঠানো সম্ভব ছিল না। এই দাবি তিনি একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা হিসেবে করেছেন।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “২৫ মার্চ রাতেই শেখ সাহেব কীভাবে জানতেন যে মেজর জিয়া বিদ্রোহ করেছেন, অধিনায়ককে হত্যা করে ব্যাটালিয়ন নিয়ে আলাদা হয়ে গেছেন? এই তথ্য তখন কেউ জানতেই পারেন না।” ফলে তার ভাষায়, “শেখ সাহেব বার্তা পাঠিয়েছিলেন—এই কথাটি হাস্যকর এবং মিথ্যা।”

তাজউদ্দীনের ভূমিকা ও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ

আমান আযমী পোস্টে আরও বলেন, শেখ মুজিব গ্রেফতার হওয়ার পর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা ভারতে পালিয়ে যান। ১০ এপ্রিল ১৯৭১ সালে তাজউদ্দীন আহমদ এককভাবে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে যোগাযোগ করে পাঁচ সদস্যের অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গঠনের ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, “তাজউদ্দীন সাহেবের সঙ্গে তখনো আওয়ামী লীগের অন্য কোনো নেতার সাক্ষাৎ হয়নি। অথচ স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল নেতৃত্ব তিনিই দিয়েছেন।” আযমীর মতে, “তাজউদ্দীন ছিলেন সেই সময়কার প্রকৃত নায়ক। শেখ সাহেব কারাবন্দি ছিলেন, আর অন্যান্য নেতাদের কোনো বড় ভূমিকা ছিল না।”

স্বাধীনতার রূপকার’ বিষয়টি গবেষণার দাবি রাখে

আযমী বলেন, “কাউকে স্বাধীনতার রূপকার বলা যাবে কিনা, সেটি গবেষণার বিষয়। তবে শেখ সাহেবের ৭ মার্চের ভাষণ মুক্তিযুদ্ধে ‘ক্যাটালিস্ট’ হিসেবে কাজ করেছে।” তিনি মন্তব্য করেন, “রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন তাজউদ্দীন আহমদ।”

বাবার মূল্যায়ন ও নিজের দৃষ্টিভঙ্গি

সবশেষে আমান আযমী বলেন, “আমার বাবা (গোলাম আজম) শেখ সাহেবকে স্বাধীনতার ‘স্থপতি’ বলেছিলেন, যা ছিল একটি রাজনৈতিক মূল্যায়ন।” তিনি যোগ করেন, “আমার দৃষ্টিতে এটিই সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত মূল্যায়ন।”


 

আমান আযমীর এই মন্তব্য নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অধ্যায়ের প্রেক্ষাপটে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বিষয়টি বহুবার যাচাই-বাছাই করা হয়েছে, এবং অধিকাংশ গবেষক ও ঐতিহাসিকরা এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে থাকেন।

Комментариев нет


News Card Generator