বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার পথ অনুসরণ করে দেশে আবারও একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দমন করে জনগণের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। স্বাধীনতার মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা, কিন্তু সেই চেতনাকে পদদলিত করে বর্তমান সরকার দমন-পীড়নের নীতি গ্রহণ করেছে।
তারেক রহমান বলেন, “স্বাধীনতার পর জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল কায়েম করে সব রাজনৈতিক দল বাতিল করেন। সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়, কেবল চারটি দলীয় অনুগত পত্রিকাকে অনুমতি দেওয়া হয়। এর ফলে সংবাদপত্রে কর্মরত শত শত সাংবাদিক চাকরি হারান এবং হাজারো পরিবার অনিশ্চয়তায় পড়ে।” তিনি উল্লেখ করেন, "ঠিক একইভাবে শেখ হাসিনাও বিভিন্ন কঠোর আইন প্রণয়ন করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে গলা টিপে হত্যা করেছেন।"
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভিত গড়ে তুলেছিলেন। তিনি বাকশালের দমননীতি পরিহার করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তারেক রহমান মনে করেন, আজ আবারও সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটছে। শেখ হাসিনার সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো কঠোর আইন করে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
“সত্য বললেই নির্যাতন নেমে আসে। সাংবাদিক, কলামিস্ট ও লেখকদেরকে নিপীড়নের মুখে পড়তে হয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এখন শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ,” বলেন তারেক রহমান।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বললেই মামলা হয়, গ্রেপ্তার হয়, এমনকি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে কারাবরণ করতে হয়। এমন পরিবেশে কেউ নির্ভয়ে কথা বলতে পারেন না। "সাংবাদিকরা শুধু নয়, সমাজের সকল পর্যায়ের মানুষকে এখন সার্বক্ষণিক ভয়ে থাকতে হয়,"— বলেন তিনি।
তারেক রহমান জানান, “গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর গণমাধ্যম কিছুটা নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। তবে এখনো তা সম্পূর্ণ স্বাধীন নয়। এখনো সেই ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রভাব বিদ্যমান। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্র কখনোই টিকবে না। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে আমাদের আগে সংবাদমাধ্যমকে মুক্ত করতে হবে।”
তার বক্তব্যে একাধিকবার তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মানে কেবল সংবাদ প্রকাশ নয়— এটি হচ্ছে চিন্তা, বিবেক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতীক। আর সেটি না থাকলে রাষ্ট্র জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে না।
তারেক রহমানের এই বক্তব্য আবারও দেশের রাজনীতিতে আলোড়ন তুলেছে। একদিকে যেখানে সরকার উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার দাবি করছে, অন্যদিকে বিএনপি ও বিরোধী পক্ষ অভিযোগ করছে একদলীয় শাসনের দিকে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে দেশকে।



















