close
কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!
শেখ হাসিনার শাসনামলে বলপূর্বক গুম: তদন্ত প্রতিবেদনের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ
নিখোঁজদের বিচার থেকে বঞ্চনা, আইনি প্রক্রিয়ার ব্যর্থতা এবং কর্তৃপক্ষের ‘উপরের আদেশে’ নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ
বলপূর্বক গুমের অভিযোগের তদন্তে কমিশনের রিপোর্টে গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিখোঁজ ব্যক্তিরা নিয়মতান্ত্রিক বিচার ও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। "উপরের আদেশ" নামক অজুহাত তুলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো এসব অভিযোগ তদন্ত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
গত রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তদন্ত কমিশনের অন্তর্বর্তী রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়। এই রিপোর্টের প্রকাশিত অংশে বলা হয়, নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান এবং তাদের উদ্ধার প্রচেষ্টা বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। র্যাব, ঢাকার সিটিটিসি এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের আর্থসামাজিক বিপর্যয় ও মানসিক যন্ত্রণা
রিপোর্টে বলা হয়েছে, বলপূর্বক গুমের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মানসিক, সামাজিক এবং আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ভুক্তভোগীরা জীবিকা হারিয়েছেন, এবং তাদের সামাজিক পুনঃএকত্রিত হওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইনি লড়াইয়ের খরচ বহন করতে গিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন।
বিচারের নামে পুনরায় নিপীড়ন
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যারা গুমের পর ফিরে এসেছেন, তাদের অনেককেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। এর ফলে, তারা পুনরায় আইনি হয়রানির শিকার হয়েছেন। আদালতে দাখিল করা ‘হেবিয়াস কর্পাস’ পিটিশনগুলো কার্যত ফলপ্রসূ হয়নি।
নারী ও শিশুদের অবস্থাও করুণ
রিপোর্টে নারী এবং শিশু ভুক্তভোগীদের বিষয়টি উঠে এসেছে। নারীদের একটি বড় অংশ সামাজিক কলঙ্কের ভয়ে এগিয়ে আসেননি। তবে যারা সাহস করেছেন, তাদের অভিজ্ঞতা চমকে দেওয়ার মতো। কিছু ঘটনায় শিশুদেরও মায়েদের সঙ্গে জোরপূর্বক নিখোঁজ করা হয়েছে।
ভবিষ্যৎ প্রতিরোধে সুপারিশ
কমিশনের সুপারিশে বলপূর্বক গুমের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জন্য ‘প্রক্রিয়াগত সংস্কার’ এবং ভুক্তভোগীদের পুনর্বাসনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এই প্রতিবেদন শুধু একটি ঘটনা নয়, বরং একটি প্রক্রিয়াগত ব্যর্থতার করুণ চিত্র তুলে ধরেছে। বলপূর্বক গুমের অভিযোগে জবাবদিহি নিশ্চিত না হলে সমাজে ন্যায়বিচারের দাবি ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে।
Nenhum comentário encontrado



















