close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

শেখ হাসিনার ফেরত নিয়ে ভারতের ‘নীরবতা’, সী'মা'ন্ত হ'ত্যা নিয়েও ক'ড়া বার্তা দিল বাংলাদেশ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জুলাই অভ্যুত্থানের পর ভারতে আশ্রয় নেয়া শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত ভারতের পক্ষ থেকে কোনো জবাব মেলেনি বলে জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। পুশইন বন্ধ ও সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়েও দিলেন কঠোর বা..

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে চরম অস্থিরতা। এরই মাঝে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ভারতে আশ্রয় নেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভবিষ্যৎ। জুলাই মাসে ঘটনার মোড় ঘুরে যাওয়ার পর শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। কিন্তু তাঁকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সাড়া মেলেনি। এ বিষয়ে মুখ খুললেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ ব্রিফিংয়ে সমসাময়িক ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলেন তিনি। ব্রিফিংয়ের শুরুতেই উঠতে থাকা গুঞ্জনের বিষয়ে সোজাসাপ্টা উত্তর দেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন,
"শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভারতের কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি তারা।"

এই মন্তব্য ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের নীরব অবস্থান এ মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন।

শুধু শেখ হাসিনা নয়, সীমান্ত ইস্যুতেও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলছে জটিল আলোচনা। সীমান্ত দিয়ে অব্যাহতভাবে পুশইন বা জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে উপদেষ্টা জানান,
"সীমান্ত দিয়ে পুশইন ঠেকানো যাচ্ছে না, এটি বন্ধে ভারতের সঙ্গে চিঠি আদান-প্রদান হচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন,
"কনস্যুলার মেকানিজমের মাধ্যমে একটি কাঠামোতে আনার চেষ্টা চলছে। তালিকা অনুযায়ী যাদের পেয়েছি, ফেরত দিয়েছি।"

এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, সীমান্ত ইস্যুতে উভয় দেশ এখনো সমন্বয়ের পর্যায়ে রয়েছে। তবে চিঠিপত্র আদান-প্রদান করেও ফল না পেলে বিষয়টি বড় ধরনের কূটনৈতিক সংকটে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

সংবাদ সম্মেলনের শেষভাগে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা নিয়েও সুর চড়ান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন,
"সীমান্ত হত্যা নিয়ে নমনীয়তার কোনো সুযোগ নেই। আমরা প্রতিবাদ করছি এবং প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ চলবে।"

এই বক্তব্যে পরিষ্কার যে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সীমান্ত হত্যা ইস্যুতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। গত কয়েক বছরে সীমান্তে বহু বাংলাদেশি বিএসএফ-এর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে, যা নিয়ে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে দুই দেশের সম্পর্ক।

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতি চরম টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান, সীমান্ত হত্যা, এবং অনুপ্রবেশের মতো বিষয়গুলো সরকারকে বাড়তি চাপে ফেলেছে। ভারতের নীরবতা এবং সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা—দুই-ই কূটনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে আরও সতর্ক করে তুলছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের সঙ্গে যেসব সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে, সেগুলোর দ্রুত সমাধান না হলে তা ভবিষ্যতে আরও জটিল পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে।

ভারতের নীরবতা এবং সীমান্ত ইস্যুতে জটিলতার মাঝে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক অবস্থান কঠিন হয়ে পড়ছে। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ভারতের নিরবতা ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে—এমনটাই ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। এদিকে সীমান্ত হত্যা ইস্যুতে সরকারের শক্ত অবস্থান—একটি সাহসী বার্তা, যা দেশবাসী এবং আন্তর্জাতিক মহলে স্পষ্ট করে দিল যে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনো আপস নয়।

Ingen kommentarer fundet