শেখ হাসিনার বিরু দ্ধে গণ হ ত্যা মা মলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় তার প্রত্যক্ষ নির..

বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নাটকীয় মোড়—আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সোমবার (১২ মে) চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, শেখ হাসিনা গণহত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা, যিনি সরাসরি বা পরোক্ষভাবে এই বর্বরোচিত ঘটনার জন্য দায়ী।
এই ঘটনার মধ্যে রয়েছে চানখারপুলে হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘটিত ছাত্র ও সাধারণ জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালানো, যার ফলে অন্তত দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আজ দুপুর ১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেবেন বলে জানা গেছে।

এর আগে গত শুক্রবার এক ফেসবুক পোস্টে তাজুল ইসলাম উল্লেখ করেছিলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে ফরমাল চার্জ দাখিল করে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।”

এছাড়াও, চানখারপুল হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে, যার ভিত্তিতে চলতি সপ্তাহেই ‘ফরমাল চার্জ’ জমা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

আদালতের নির্দেশ ও প্রেক্ষাপট:

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দিয়েছিল যে, শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে
এই মামলাটি দায়ের হয়েছিল ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর, যেখানে অভিযোগ ছিল—জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গুলি চালানো, হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করা, এবং সংগঠিত অপরাধে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের সহ ৪৬ জন সরাসরি দায়ী।

তদন্ত প্রতিবেদন জমা হওয়ায় এখন ট্রাইব্যুনাল ‘ফরমাল চার্জ’ গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনায় নেবে এবং আদালতে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপট:

২০২৩ সালের মধ্যভাগে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরকার বৃহৎ পদ্ধতিগত দমনপীড়ন চালায়, যার অংশ হিসেবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও অন্যান্য শহরে বুলেট, টিয়ারশেল এবং লাঠিচার্জের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের নির্মমভাবে আঘাত করা হয়।
নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার, গুম ও হত্যার শিকার হয় অসংখ্য নিরস্ত্র শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ।

এই পরিস্থিতিতে মানবাধিকার সংস্থাগুলো জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।


 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই তদন্ত প্রতিবেদন জমা হওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী অধ্যায়, যা দেশের বিচারব্যবস্থা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র চর্চায় গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এখন দেখার বিষয়—আদালত ‘ফরমাল চার্জ’ গ্রহণ করে কীভাবে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যায়।

Keine Kommentare gefunden


News Card Generator