close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

শাহবাগে শিক্ষক আন্দোলনে পুলিশের লাঠিপেটা, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫: রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে সোমবার দুপুরে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের আন্দোলন চরম আকার ধারণ করেছে। শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবিতে তাদের
ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫: রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে সোমবার দুপুরে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের আন্দোলন চরম আকার ধারণ করেছে। শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবিতে তাদের প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ থাকলেও, পুলিশ তাদের প্রতিবাদ থামানোর জন্য জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এই ঘটনার পর, পুলিশের লাঠিপেটার মুখে শিক্ষকরা রাস্তার ওপর বসে পড়েন এবং তাদের আন্দোলন জারি রাখেন। প্রতিবাদের লক্ষ্য ও দাবি শিক্ষকরা সকাল ১০টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জমায়েত হন। তাদের প্রধান দাবি ছিল, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর জাতীয়করণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সুপারিশের ভিত্তিতে তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো এসব মাদ্রাসাকে জাতীয়করণের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছিলেন, তারা ছয় দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন, যার মধ্যে অন্যতম হল—শিক্ষকদের সম্মানজনক待遇 এবং উন্নত সুযোগ-সুবিধা প্রদান। পুলিশি হস্তক্ষেপ ও পরিস্থিতি দাবি আদায়ের জন্য শিক্ষকরা জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। তাদের লক্ষ্য ছিল, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় পর্যন্ত পদযাত্রা করা এবং একটি স্মারকলিপি প্রদান করা। কিন্তু শাহবাগ এলাকায় পৌঁছানোর পর পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন তারা। পুলিশ চারুকলার মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে পথ আটকে দেয় এবং আন্দোলনকারীদের শাহবাগে প্রবেশ করতে নিষেধ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকরা রাস্তায় বসে পড়েন, কিন্তু পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য প্রথমে জলকামান নিক্ষেপ করে, কিন্তু তাও শিক্ষকদের আন্দোলন থামাতে ব্যর্থ হয়। এরপর পরিস্থিতি আরও কঠোর হয়ে ওঠে এবং পুলিশ দুটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এই সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজে চারপাশের পরিবেশ আরও উত্তাল হয়ে ওঠে। জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় পুরো শাহবাগ এলাকা একেবারে মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। শিক্ষকদের প্রতিবাদ ও লক্ষ্য শিক্ষকরা জানিয়েছিলেন, তাদের এই আন্দোলন শুধুমাত্র তাদের চাকরি ও মর্যাদার জন্য নয়, বরং এটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তাদের দাবি, সরকার যদি তাদের প্রয়োজনীয় দাবি মেনে নেয়, তবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। "আমরা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সুরক্ষিত রাখতে এবং মাদ্রাসা শিক্ষকদের সন্মানিত করতে আন্দোলন করছি। এই আন্দোলন শুধু আমাদের জন্য নয়, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ,"- বলেন আন্দোলনের নেতা একজন শিক্ষক। পরিস্থিতি ভবিষ্যতে কী হবে? বর্তমান পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও, আন্দোলনকারীরা জানিয়েছে, তারা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবে যতক্ষণ না তাদের দাবি পূর্ণ হয়। সরকার যদি তাদের দাবি মেনে নেয়, তবে পরিস্থিতি শান্ত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানিয়েছে, তারা আগামী দিনে আরও বড় কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন, যার মধ্যে শাহবাগে অবস্থান ধর্মঘট ও আরও বৃহত্তর প্রতিবাদ সমাবেশ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এতটাই কঠিন কেন আন্দোলন? স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে সরকারের উপেক্ষিত ছিল। শিক্ষকরা মনে করেন, সরকারের তরফ থেকে কোনো স্পষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে তাদের আন্দোলন আরও তীব্র হয়েছে। তারা দাবি করছেন, এই মাদ্রাসাগুলির শিক্ষকরা কম বেতন, কম সুযোগ-সুবিধা এবং অস্থির কর্মপরিস্থিতিতে কাজ করছেন। এর ফলে, তাদের মধ্যে অনেকেই পেশা পরিবর্তনের কথা ভাবছেন, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার অধিকার সবার রয়েছে, তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শাহবাগের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি এখন রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছেন অনেকেই, তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকলেও, পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেওয়া হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।
No comments found


News Card Generator