close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

শাহবাগ উ ত্তাল: আওয়ামী লীগ নি ষিদ্ধের দাবিতে বিশাল গণজমায়েতের প্রস্তুতি, পরিবহন বন্ধ, উত্তে জনা তুঙ্গে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাজধানীর শাহবাগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে টানা অবরোধ চলছে। একাধিক রাজনৈতিক ও ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণে বিকালে হচ্ছে গণজমায়েত। পুরো মোড়জুড়ে থমথমে অবস্থা, বন্ধ যান চলাচল। আন্দোলনকারীরা জানালেন, দাবি আদ..

রাজধানীর বুকে আবারও উত্তাল শাহবাগ। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে টানা অবরোধে অচল হয়ে পড়েছে শাহবাগ মোড়। রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে প্রতি ঘণ্টায়। আজ শনিবার সকাল থেকেই শাহবাগে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

শাহবাগ মোড় ঘিরে রাখা হয়েছে ব্যারিকেড দিয়ে, আর তাতেই পুরো এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ যানজট। ঢাকার প্রাণকেন্দ্র শাহবাগ কার্যত এক ‘বন্দ নগরী’তে পরিণত হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, জরুরি অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে কোনো বাধা দেওয়া হচ্ছে না।

অবরোধে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, স্লোগানে মুখর শাহবাগ

শনিবার দুপুরে বিডিনিউজের এক সাংবাদিককে আন্দোলনকারী ফাহিম হোসেন জানান, “আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছি—আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, এটা আমরাও বুঝি। কিন্তু এই দমন-পীড়নের রাজনীতি বন্ধ না হলে জনগণের ভবিষ্যত আরও অন্ধকার।”

অবরোধস্থলে ‘ব্যান ব্যান, আওয়ামী লীগ’, ‘একটা একটা লিগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’—এই ধরনের হুঁশিয়ারিপূর্ণ স্লোগান উঠে আসছে। এতে পরিষ্কার, আন্দোলনকারীরা রাজনৈতিক দাবির পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক চাপও সৃষ্টি করতে চাইছে।

বৃহত্তর রাজনৈতিক সংহতি, এক প্ল্যাটফর্মে নানা মতের দল

বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’র সামনেও অবস্থান নেন এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে একদল বিক্ষোভকারী। এই অবস্থানে একাত্মতা প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি সংগঠন।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর তারা মিন্টো রোডে একটি অস্থায়ী মঞ্চ নির্মাণ করে সমাবেশ করেন। সেখানে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন হাতে যোগ দেন শত শত নেতাকর্মী। বক্তৃতায় উঠে আসে, “এই সরকার দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। মানুষ আজ নির্যাতনের শিকার।”

বিকালে গণজমায়েতের ঘোষণা, তিন দফা দাবি

সমাবেশ শেষে দক্ষিণাঞ্চলীয় এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ শাহবাগে গণজমায়েতের ঘোষণা দেন। শুক্রবার বিকাল থেকেই আন্দোলনকারীরা শাহবাগ অভিমুখে রওনা হন। সেই সন্ধ্যা থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়টি পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

বিক্ষোভকারীদের তিন দফা দাবি হচ্ছে—
১. আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা
২. দলটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার
৩. জুলাই অভ্যুত্থানের সময়ের দমন-পীড়নকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া

শনিবার বিকাল ৩টার দিকে শাহবাগে আবারও বড় পরিসরের গণজমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, “এই সরকারকে টিকিয়ে রাখার অর্থ দেশের গণতন্ত্রকে সমাহিত করা। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক ময়দান থেকে সরে যেতে হবে।”

প্রশাসনের ভূমিকা ও জনদুর্ভোগ

যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, তবে গোটা এলাকায় সতর্ক অবস্থান বজায় রাখা হয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। শাহবাগ কেন্দ্র করে যে সব রাস্তা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের সাথে সংযুক্ত, সেগুলোর সবকটিই বর্তমানে বন্ধ।

জনগণের অনেকেই বাধ্য হয়ে বিকল্প রুটে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, কেউ কেউ পায়ে হেঁটেই ছুটছেন গন্তব্যের দিকে। ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের মধ্যে এই পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও, আন্দোলনকারীদের ভাষ্য—“জনগণ আমাদের পাশে আছে।”


 রাজনীতির উত্তপ্ত মাঠে শাহবাগ এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে

এই মুহূর্তে রাজধানীজুড়ে বিরাজ করছে অস্থিরতা। বিএনপির অনুপস্থিতিতেই নতুন করে রাজপথ দখলের লড়াইয়ে উঠে এসেছে একাধিক ইসলামপন্থী এবং নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের মতো গুরুতর দাবির সামনে সরকার কী পদক্ষেপ নেয়—তা-ই এখন দেখার বিষয়।

সবার চোখ এখন বিকালের গণজমায়েত এবং এর পরবর্তী ঘটনার দিকে।

کوئی تبصرہ نہیں ملا