সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রেকর্ড ২০৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গবেষণা ও উদ্ভাবনে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১০ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৭৯ লাখ টাকা বেশি।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর উপাচার্যের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই বাজেট ঘোষণা করেন শাবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিমসহ বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক ও দপ্তরপ্রধানরা।
এবারের বাজেট বণ্টনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বরাদ্দ রাখা হয়েছে বেতন-ভাতা খাতে। শিক্ষকদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বিশেষ সুবিধাসহ মোট বেতন সহায়তায় রাখা হয়েছে ৭১ কোটি টাকা।
পণ্য ও সেবা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এছাড়া, পেনশন খাতে ১৫ কোটি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ২ কোটি ৫০ লাখ, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বাবদ ২০ কোটি এবং যন্ত্রপাতি অনুদানে ৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করে এবারে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের গবেষণার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা, পিএইচডি গবেষণায় ১ কোটি ৫০ লাখ, মাস্টার্স পর্যায়ে ৫০ লাখ, শিক্ষাবৃত্তিতে ৬৭ লাখ এবং উদ্ভাবন খাতে ৩ লাখ টাকা।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, "বিগত বছরের তুলনায় এবার বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গবেষণার ওপর আমাদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে যাতে করে আন্তর্জাতিক মানের গবেষক তৈরি করা যায়।"
তিনি আরও বলেন, "বর্তমানে ক্যাম্পাসে অনেকগুলো বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়ন হলে আমাদের যেসব কাঠামোগত ও একাডেমিক সংকট আছে, সেগুলোর সমাধান হয়ে যাবে। তবে এর জন্য শিক্ষকমণ্ডলী, শিক্ষার্থী, প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অগ্রগতির প্রসঙ্গে কোষাধ্যক্ষ ড. ইসমাইল হোসেন বলেন, "আমরা গবেষণা, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে চাই। বাজেটে এসব খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়ার মাধ্যমে সেই চেষ্টার প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ বছরের বাজেট বাস্তবায়ন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে এবং শিক্ষার গুণগত মানেও দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে।
এছাড়াও, একাধিক বিভাগে নতুন ল্যাব স্থাপন, আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন ও ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নের জন্যও বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশা করছে, এই বাজেটের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই শাবিপ্রবি দেশের সেরা প্রযুক্তি ও গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটিতে পরিণত হবে।