close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

সেনাবাহিনীর ওপর হামলা, সিলেটে বিএনপির সভাপতিসহ ৯ জন কারাগারে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সেনাবাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় সিলেটে বিএনপি সভাপতি আব্দুর রশিদসহ ৯ নেতা জামিন হারিয়ে কারাগারে। আদালতের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।..

সেনাবাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদসহ দলের শীর্ষস্থানীয় ৯ নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। রবিবার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ আশফাকুর রহমান তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে এই আদেশ দেন।

আদালতে হাজির হয়ে আসামিরা জামিন চাইলেও বিচারক বলেন, “ঘটনার প্রকৃতি, প্রমাণ এবং মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় জামিন দেওয়া অনুচিত।” এই রায়ের পরপরই আদালতের প্রাঙ্গণে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আসামিদের পক্ষে থাকা আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন বলেন, “আমার মক্কেলরা আগে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। কিন্তু জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নিয়ম অনুসারে তারা আদালতে হাজির হন। তবে দুঃখজনকভাবে আদালত আজ তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।”

প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর বাজার এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি নিয়মিত টহল দল ভারত থেকে চোরাইপথে আনা কয়েকটি মহিষ জব্দ করে। এসব পণ্য জৈন্তাপুর সেনা ক্যাম্পে নেওয়ার সময় একদল লোক হঠাৎ করে সেনাসদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে হামলা চালায়।

এই হামলায় বেশ কয়েকজন সেনাসদস্য আহত হন এবং ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর টহল গাড়িও ভাঙচুরের শিকার হয়। ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে, সেনা সদস্যরা নিজেরা জীবনরক্ষায় পিছু হটে ক্যাম্পে ফিরে যেতে বাধ্য হন।

পরদিন জৈন্তাপুর মডেল থানায় হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্ন ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। মামলায় ৭০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।

বিএনপি নেতারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এটি একটি “প্রশাসনিক প্রতিশোধমূলক মামলা” এবং রাজনৈতিক হয়রানির অংশ। সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহনাজ বেগম বলেন, “এই মামলা একটি সাজানো নাটক। সরকারের নির্দেশে বিরোধী দল দমন করার জন্য সেনা হামলার অজুহাতে নেতাকর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাব। নেতাকর্মীদের জেলে পুরে সত্য চাপা দেওয়া যাবে না।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মামলার রায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কারাগারে পাঠানো সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রকাশ হতে পারে, আবার এটিকে বিরোধী দলের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবেও দেখছেন অনেকে।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “সেনাবাহিনীর ওপর হামলার ঘটনা যদি সত্য হয়, তবে তা জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন। সেক্ষেত্রে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ হবে। তবে প্রমাণ ছাড়া কাউকে সাজা দেওয়া হবে না।”

এই মামলার পর সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি সমর্থকদের মাঝে চরম অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী দিনে এই ইস্যু ঘিরে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে টানাপোড়েন আরও বাড়তে পারে।

এই মুহূর্তে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ এবং পরবর্তী শুনানি নিয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

No comments found


News Card Generator