কুষ্টিয়ার কালীশংকরপুরে গোপন সেনা অভিযান, ধরা পড়লেন সুব্রত বাইন
বাংলাদেশের এক সময়কার কুখ্যাত ও ভয়ংকর শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোরবেলা কুষ্টিয়া শহরের কালীশংকরপুর এলাকায় এক অভূতপূর্ব গোপন অভিযানে তাকে আটক করা হয়। এই অভিযান চলে টানা তিন ঘণ্টা, যেখানে সেনাবাহিনী ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরা অংশ নেয়।
এই অভিযানে সুব্রত বাইনের সঙ্গে ধরা পড়ে আরও তিন সহযোগী—মোল্লা মাসুদ, শরীফ এবং আরাফাত। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, অভিযানের সময় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। পুরো এলাকা ঘিরে রেখে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে অভিযানটি পরিচালনা করা হয় যাতে কোনোভাবেই তারা পালাতে না পারে।
দেশজুড়ে সুব্রত বাইনের বিরুদ্ধে অজস্র অভিযোগ
সুব্রত বাইন একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার কারণে বহু বছর ধরেই দেশের নিরাপত্তা সংস্থার নজরদারিতে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক হত্যা মামলা। বিশেষ করে ঢাকায় সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী তৎপরতায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একটি দায়িত্বশীল গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, সুব্রত বাইনকে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হবে। সেখানে তাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
যৌথ বাহিনীর সফলতা এবং প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
এই সফল অভিযানকে প্রশাসন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। গোয়েন্দারা মনে করছেন, সুব্রত বাইনের গ্রেফতারের মাধ্যমে সাম্প্রতিক রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী ঘটনার জট খুলবে। এই গ্রেফতার শুধু একজন সন্ত্রাসীকে আটক করাই নয়, বরং একটি বড় সন্ত্রাসী চক্রের মূলোচ্ছেদে সহায়ক হতে পারে।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, সুব্রত বাইনকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তার সন্ত্রাসী চক্র, আর্থিক যোগানদাতা ও রাজনৈতিক আশ্রয়দাতাদের নামও প্রকাশ্যে আনার চেষ্টা করা হবে।
অভিযানের পেছনের গল্প
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভোরবেলা হঠাৎ করেই এলাকায় অসংখ্য সেনা সদস্য ও পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়। চারপাশে নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে অভিযানের সময় কেউই কিছু বুঝে উঠতে পারেনি। অভিযান শেষে সাদা পোশাকধারী একদল সদস্য চারজনকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
গণমাধ্যমে আসছে আরও তথ্য
অভিযানের বিস্তারিত ও সুব্রত বাইনের কাছ থেকে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করবে প্রশাসন। দেশবাসী এখন অপেক্ষায় আছে—এই কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে কেন্দ্র করে আরও কোন কোন চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে।
এই গ্রেফতারের মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী আবারও প্রমাণ করল, অপরাধ যত শক্তিশালীই হোক, শেষ রক্ষা হয় না। সুব্রত বাইনের গ্রেফতার নিঃসন্দেহে দেশের সন্ত্রাস দমনে একটি বড় বিজয়।