close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সেভেন সিস্টার্সকে সিঙ্গাপুর বানানোর ঘোষণা মুকেশ আম্বানির..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানি ঘোষণা দিয়েছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যকে যোগাযোগ ও ডিজিটাল উন্নয়নের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের আদলে গড়ে তুলবেন। ৭৫ হাজার কোটি রুপির এই ঐতিহাসিক বিনিয়োগ সেভেন সিস্টার্সের ভ..

নতুন দিগন্তে ভারতের সেভেন সিস্টার্স: মুকেশ আম্বানির ৭৫ হাজার কোটি টাকার স্বপ্ন

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য — যেগুলোকে সম্মিলিতভাবে ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে অভিহিত করা হয় — সেখানে এক নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটাতে চলেছেন ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, এই অঞ্চলগুলোর সার্বিক উন্নয়নে তার প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স গ্রুপ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে ৭৫ হাজার কোটি রুপি

এই অভূতপূর্ব বিনিয়োগ পরিকল্পনার কথা প্রকাশ পেয়েছে ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে। সূত্র মতে, চলতি বছর অনুষ্ঠিত রাইজিং নর্থইস্ট ইনভেস্টর সামিটে অংশ নিয়ে মুকেশ আম্বানি এই ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, “উত্তর-পূর্ব ভারতের এই সাতটি রাজ্যে রয়েছে অসাধারণ সম্ভাবনা। এ অঞ্চলটিকে যোগাযোগ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে এমন এক জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেটি ভবিষ্যতে সিঙ্গাপুরের মতো হয়ে উঠবে।”

 ইতিমধ্যেই বিপুল বিনিয়োগ

রিলায়েন্স গ্রুপ এই অঞ্চলে একদিনে আসেনি। ইকোনমিক টাইমস জানায়, গত চার দশকে প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে ৩০ হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগ করেছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। এবার সেই বিনিয়োগ দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি করে ৭৫ হাজার কোটি রুপিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

মুকেশ আম্বানি বলেন, “এখনই সময়, যখন এই এলাকাগুলোর সুপ্ত সম্ভাবনাগুলো জাগিয়ে তোলা দরকার। আমরা চাই, এখানকার জনগণ উন্নয়নের বাস্তব স্বাদ পাক, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি নতুন উত্তর-পূর্ব ভারত পায়।”

 ছয় দফা প্রতিশ্রুতি

উন্নয়নের রূপরেখা হিসেবে আম্বানি ছয়টি মূল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজিটাল সংযোগ

তিনি জানান, “আমাদের টেলিকম প্রতিষ্ঠান জিও ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষকে ইন্টারনেট সংযোগে নিয়ে এসেছে। আমরা চাই, এই পরিসর ১০০ শতাংশে পৌঁছে যাক।”

যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ

বিনিয়োগের একটি বড় অংশ ব্যয় করা হবে সড়ক, রেল এবং ডিজিটাল হাইওয়ে নির্মাণে। এর ফলে দূরত্ব কমে আসবে, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসবে এবং পর্যটন শিল্পও ফুলে-ফেঁপে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, “এই অঞ্চলটি শুধু সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য নয়, ভৌগোলিক সৌন্দর্যের জন্যও অনন্য। আমরা চাই, দেশের অন্যান্য অংশ যেমন এখানে সহজে আসতে পারে, তেমনি এখানকার মানুষও দেশের মূল অর্থনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে পারে।”

কৌশলগত লক্ষ্য: সিঙ্গাপুরের আদলে নগরায়ণ

মুকেশ আম্বানি আরও বলেন, “আমার স্বপ্ন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজধানীগুলো আগামী ১০ বছরে সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত শহরে পরিণত হবে — যেখানে থাকবে স্মার্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, এবং বিশ্বমানের নাগরিক সুবিধা।”

 

এই বিনিয়োগ কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, বরং ভারতের ভৌগোলিক ভারসাম্য রক্ষার পথকেও সুগম করবে। উত্তর-পূর্ব ভারতের ইতিহাসে এটি হতে পারে এক মোড় ঘোরানো মুহূর্ত — যেখানে পিছিয়ে পড়া সাতটি রাজ্য একসাথে জেগে উঠবে উন্নয়নের আলোয়।

Nenhum comentário encontrado