close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সচিবালয়ে উ'ত্তে'জনা চরমে: বি'ক্ষো'ভ-প্র'তি'বাদে অচলাবস্থা, সরকারকে দুই দিক থেকে চাপ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনের মধ্যেই পাল্টা অবস্থানে ‘জুলাই মঞ্চ’। ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান। দু’পক্ষের অবস্থানে রণ..

সচিবালয়ের চারপাশে বিরল এক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ করছে সচিবালয় ও এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আন্দোলনকারীরা বলছেন, এ অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে চাকরির নিরাপত্তা ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। তারা সরকারের কাছে এই অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান।

অপরদিকে, ‘জুলাই মঞ্চ’ নামে একটি নতুন মঞ্চ এসব আন্দোলনকারীদের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে পাল্টা অবস্থান নিয়েছে। তাদের দাবি, এই আন্দোলনের আড়ালে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি কাজ করছে। সোমবার রাত থেকেই ওসমানী মিলনায়তনের পাশে অবস্থান নিয়েছে জুলাই মঞ্চের কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার তারা পুলিশের ১৪৪ ধারা অমান্য করে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেয়।

আলোচনায় আশার আলো?
দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বসে ‘জুলাই মঞ্চ’-এর ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তাদের দাবি ছিল, সচিবালয়ের আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করা। মঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি আসে, ততক্ষণ তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করলেও একাধিকবার দু’পক্ষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে নিতে অনুরোধ করলেও উভয় পক্ষ অনড় অবস্থান নেয়। এতে সচিবালয়ের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। দেখা যায়, গেটের বাইরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য।

ভাঙনের সুর প্রশাসনে
বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতা এবং সাবেক সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার এক ব্রিফিংয়ে জানান, আন্দোলনকারীদের তালিকা সরকারের হাতে পৌঁছেছে। সেখানে ৩৩৪ জনের নাম রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, “বিভিন্ন দপ্তরে বিভক্ত হয়ে কর্মচারীরা অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, যা প্রশাসনিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।”

তিনি আরও দাবি করেন, সরকার নিজেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়াই একটি বিতর্কিত অধ্যাদেশ জারি করে প্রশাসনকে অস্থিতিশীল করে তোলা হয়েছে। এখন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এ অচলাবস্থা আরও তীব্র হবে।

জনমনে উদ্বেগ
সচিবালয় ঘিরে চলমান এই টানাপোড়েনে সাধারণ মানুষও উদ্বিগ্ন। সরকারি দপ্তরের কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় অনেকেই প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষ করে যারা জেলা বা উপজেলা থেকে রাজধানীতে এসে অফিসে কোনো কাজ সম্পন্ন করতে আসেন, তারা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।

উপসংহার
এখন প্রশ্ন হচ্ছে—সরকার কীভাবে এই সংকটের সমাধান করবে? আন্দোলনকারীরা যেমন অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে অনড়, তেমনি ‘জুলাই মঞ্চ’ও ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে অনড়। আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান সম্ভব হলেও, তার আগে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত না হয়—সেটি নিশ্চিত করাই এখন প্রশাসনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

No comments found