জাতীয় সংকট নিরসনে খালেদা জিয়াই হতে পারেন ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু—মাহবুব উল্লাহ্র বার্তা রাজনীতিতে নাড়া দিল
বর্তমান বাংলাদেশ একটি কঠিন রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক অচলাবস্থা, গণতন্ত্রের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, এবং সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধের শঙ্কা ক্রমেই গভীর হচ্ছে। এমন এক সংকটময় প্রেক্ষাপটে বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ্ সরাসরি আহ্বান জানালেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে—জাতিকে রক্ষায় তিনি যেন এগিয়ে আসেন।
তার ভাষায়, “এটি জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এমন সময় যদি বেগম খালেদা জিয়া উদাত্ত কণ্ঠে বলেন—এই সঙ্কট সমাধানে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই, তাহলে মানুষ শুনবে, মানুষ সাড়া দেবে।” তিনি মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে বেগম জিয়ার ভূমিকা শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং তা হতে পারে ইতিহাস বদলের সূচনা।
ড. মাহবুব উল্লাহ্ আরও বলেন, “যদি বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা একযোগে বেগম জিয়াকে অনুরোধ করেন এই জাতীয় দায়িত্ব নিতে, আমার বিশ্বাস তিনি সাড়া দেবেন। তার মধ্যে রয়েছে সেই রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, সেই আস্থা, এবং সেই জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গি যা আজকের বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।”
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বর্তমান আলোচনাভিত্তিক উদ্যোগের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, “ইউনূস সাহেবের নেতৃত্বে চলমান আলোচনা প্রক্রিয়া যদি থেমে যায়, তাহলে জাতি এক ভয়াবহ হতাশার মুখে পড়বে। এই আলোচনা জাতীয় ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।”
তিনি সরাসরি বলেন, “বেগম জিয়া রাজনীতিতে আপসহীন ভাবমূর্তি তৈরি করলেও, আজকের এই সংকটাপন্ন মুহূর্তে তার ভেতরেই লুকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক সমঝোতার আসল চাবিকাঠি। তার নেতৃত্বে একটি গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর সমঝোতা গঠিত হলে তা হবে এক যুগান্তকারী ঘটনা।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি এই সংকট নিরসনে ব্যর্থ হই, তাহলে দেশে আবারও আধিপত্যবাদী শক্তির উত্থান ঘটবে। ভারতের প্রভাব বাড়বে, রাজনৈতিক দমন-পীড়নের চক্র আবার সক্রিয় হবে, এবং পরিস্থিতি গৃহযুদ্ধের দিকে মোড় নিতে পারে।”
এ সময় তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তিগুলো কেন এই ভয়াবহ সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করছে না? কেন তারা আজও সংঘাতের রাজনীতির বাইরে এসে আলোচনার টেবিলে বসতে পারছে না?”
তার বক্তব্যে ছিল একটি সুস্পষ্ট সতর্কতা: “এই অচলাবস্থার সুযোগে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো নিজেদের স্বার্থ হাসিলে মাঠে নেমে পড়বে। বাংলাদেশের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ আরও গভীর হবে।”
ড. মাহবুব উল্লাহ্র আহ্বান ছিল সবার প্রতি: “জাতীয় ঐক্য এখন সময়ের দাবি। দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে আলোচনার পথে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় আবারও গণতন্ত্র বিপন্ন হবে, এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।”
বাংলাদেশ আজ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক চাপ ও গণতন্ত্রের সংকটে নিমজ্জিত। এমন সময়, মাহবুব উল্লাহ্র মতো বিশ্লেষকের এই সরাসরি আহ্বান কেবল রাজনৈতিক মহল নয়, গোটা জাতিকে নাড়া দিয়েছে। বেগম জিয়ার ভূমিকাই হতে পারে সমঝোতার কেন্দ্রে—এমন ভাবনাই এখন নতুন আলোচনার জন্ম দিচ্ছে।



















