ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনা এবং পাল্টাপাল্টি হামলার পর এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল পাকিস্তান। সামরিক ও বাণিজ্যিকসহ সব ধরনের ফ্লাইট চলাচলের জন্য দেশটির আকাশসীমা আবারও খুলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১০ মে) পাকিস্তান এয়ারপোর্টস অথরিটি (পিএএ)-এর একজন মুখপাত্র এই ঘোষণা দেন। খবরটি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই পদক্ষেপটি এলো এমন এক সময়, যখন ভারত ও পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাত ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এর আগে, নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর চলমান উত্তেজনার কারণে পাকিস্তান সরকার আকাশসীমা বন্ধ রাখার মেয়াদ ১১ মে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছিল।
পাকিস্তান এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র জানান, “দেশের সব বিমানবন্দর এখন সম্পূর্ণরূপে সচল রয়েছে। যাত্রীদের অনুরোধ করা হচ্ছে, তারা যেন তাদের নির্ধারিত ফ্লাইটের নতুন সময়সূচি জানতে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।”
এর আগে আজ ভোরে পাকিস্তান দাবি করে, ভারতের দিক থেকে দেশটির অভ্যন্তরে অন্তত তিনটি বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। যদিও এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানও ভারতের একটি সামরিক স্থাপনায় অভিযান চালায়।
এই সংঘাত যখন উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছায়, তখন আন্তর্জাতিক মহলের কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় উভয় দেশ একমত হয় যুদ্ধবিরতিতে। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এই প্রসঙ্গে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ভূমিকা রেখেছে এবং আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই।”
এই পরিস্থিতির মধ্যেই আগামী ১২ মে ভারত ও পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও) পর্যায়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকে সাম্প্রতিক হামলা, যুদ্ধবিরতি এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আকাশসীমা খোলার এই সিদ্ধান্ত শুধু পরিবহন নয়, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনার ইতিহাস থাকলেও সাম্প্রতিক সংঘাতের দ্রুত সমাধান এবং আলোচনায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে।