সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও করিডোর বিষয়ে আপসহীন সেনাবাহিনী

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে একচুলও আপস নয়—সাফ জানিয়ে দিল সেনাবাহিনী। করিডোর নিয়ে কোনো প্রকার সমঝোতা নয়, প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানানো হয় সাম্প্রতিক ব্রিফিংয়ে। কেএনএফ ও সীমান্ত নিরাপত্তা ..

সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও করিডোর বিষয়ে সেনাবাহিনীর আপসহীন বার্তা

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে কোনো ধরনের আপস করবে না বলে দৃঢ় অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে। ২৬ মে (সোমবার) সেনা সদর দফতরে আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনী স্পষ্ট করে দেয়, দেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তার প্রশ্নে সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুত এবং প্রতিটি সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে।

এই ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বলেন, “করিডোর একটি স্পর্শকাতর জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু। দেশের সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট হয় এমন কিছু হলে তা প্রতিহত করতে সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেবে।” একইসঙ্গে জানানো হয়, বর্তমানে সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো ধরনের টানাপোড়েন নেই এবং উভয় পক্ষ মিলেই দেশের স্বার্থে একযোগে কাজ করছে।

কেএনএফ দমনে সেনাবাহিনীর সক্রিয়তা

ব্রিফিংয়ে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বিষয়ে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে কেএনএফের ১,৯৭৯ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চলমান অভিযানে এ পর্যন্ত মোট ১৪,০০০-এরও বেশি সদস্যকে আটক করা হয়েছে, যেটা একটি বড়সড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, কেএনএফ-এর জন্য ৩০ হাজার ইউনিফর্ম তৈরির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটি কেবল একটি নিরাপত্তা ইস্যু নয়, বরং দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত এক মাসে ৪ হাজারেরও বেশি মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই তথ্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, শুধু সীমান্ত বা রাজনৈতিক নিরাপত্তাই নয়, অভ্যন্তরীণ সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষাতেও সেনাবাহিনী অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

সরকার ও সেনাবাহিনীর সম্পর্ক: স্বচ্ছ ও সমন্বিত

ব্রিফিংয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা ছিল—সেনাবাহিনী সরকারের অধীনেই কাজ করে এবং কোনো মতপার্থক্য নেই। গত ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের স্বার্থে সেনাবাহিনী সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছে। এটি প্রমাণ করে যে, দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা একটি সুসংগঠিত কাঠামোর মধ্যে চলছে।

সীমান্ত ইস্যু ও পুশ-ইন সম্পর্কে সেনাবাহিনীর অবস্থান

সীমান্ত এলাকায় পুশ-ইনের বিষয়ে সেনাবাহিনী জানায়, এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে সেনাবাহিনী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী হস্তক্ষেপ করবে।

বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টির চেষ্টায় কঠোর ব্যবস্থা

ব্রিফিংয়ে আরেকটি গুরুতর বার্তা ছিল—যদি কেউ “মব” তৈরি করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, তাহলে সেনাবাহিনী কোনো ধরনের ছাড় দেবে না। এমন অপচেষ্টাকে শক্ত হাতে দমন করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।


 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে কোনো পরিস্থিতিতে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে, এই বার্তা ব্রিফিংয়ে স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়েছে। করিডোর ইস্যু, কেএনএফের কার্যক্রম, মাদক কারবারি ও সীমান্ত পরিস্থিতি—সবকিছুতে সেনাবাহিনীর একবিন্দু ছাড় না দেওয়ার মনোভাবই দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

कोई टिप्पणी नहीं मिली