close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

সারাদেশে ছড়িয়ে আছে ৮০০ আয়নাঘর! প্রধান উপদেষ্টার চাঞ্চল্যকর মন্তব্য

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা গুম ও গোপন বন্দিশালাগুলোর সংখ্যা কত? অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক মন্তব্যে উঠে এসেছে এক চ
সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা গুম ও গোপন বন্দিশালাগুলোর সংখ্যা কত? অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক মন্তব্যে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর সত্য—বাংলাদেশজুড়ে ৮০০টিরও বেশি ‘আয়নাঘর’ রয়েছে! বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মী ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, “এ রকম ইন্টারোগেশন সেল, টর্চার সেল সারা বাংলাদেশজুড়ে আছে। আগে ধারণা ছিল হাতে গোনা কয়েকটি আছে, কিন্তু এখন শুনছি ৭০০-৮০০! সংখ্যা নিরূপণ করা যায়নি। কতটা জানা গেছে, কতটা অজানা রয়ে গেছে, তা বলা কঠিন।” গোপন বন্দিশালায় কী ঘটেছে? সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল এবং র‌্যাব-২ এর সিপিসি-৩-এর অভ্যন্তরীণ সেলগুলো পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর তিনি র‌্যাব সদর দপ্তরের টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স সেন্টারেও যাচ্ছেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নৃশংস অবস্থা! যে বর্ণনা শুনেছি, তা অবিশ্বাস্য মনে হয়। এটি কি আমাদের সমাজ? আমরা কি সত্যিই এমন কিছু করেছি? নিগৃহীতদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা যা বর্ণনা দিয়েছেন, তা শিউরে ওঠার মতো।” তিনি আরও বলেন, “পূর্ববর্তী সরকার দেশকে আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে ঠেলে দিয়েছিল। আয়নাঘর তারই একটি উদাহরণ।” আয়নাঘরের ভয়াবহ ইতিহাস ‘আয়নাঘর’ শব্দটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজ-এর এক প্রতিবেদনে। তারা প্রকাশ করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে গুম করে ‘বিশেষ’ বন্দিশালায় আটকে রাখত। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেকে আয়নাঘর থেকে ফিরে এসে নিজেদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেন। গুমের ভয়ংকর পরিসংখ্যান একাধিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়াবহ চিত্র— 🔹 ২০০৯ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬০৫ জন গোপনে বন্দি ছিলেন। 🔹 ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত ৩৪৪ জন গুমের শিকার হন। 🔹 ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়, ৬৬ জনকে সরকারি হেফাজতে পাওয়া যায়। বহু নিখোঁজ ব্যক্তির ভাগ্য অজানা থেকে গেছে। গুমের শিকার অনেকে ফিরে আসলেও তারা চুপ থাকেন। ধারণা করা হয়, এই ব্যক্তিদের দীর্ঘদিন আয়নাঘরে বন্দি রাখা হয়েছিল। কারা ছিলেন আয়নাঘরের বন্দি? অভিযোগ রয়েছে, আয়নাঘরে বন্দি ছিলেন— ✔️ অধ্যাপক মোবাশার হাসান ✔️ সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান ✔️ ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ কুমার রায় ✔️ মাইকেল চাকমা ✔️ মীর আহমদ বিন কাসেমসহ অনেকে। তদন্ত কমিশনের পরিদর্শন ও ভবিষ্যৎ করণীয় গত ১৯ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন তার সঙ্গে একটি বৈঠক করেছে এবং গুমের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি জানানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের আহ্বানে আয়নাঘর পরিদর্শনে গেছেন। সরকারি তদন্ত কতদূর এগিয়েছে এবং এই ভয়ংকর বাস্তবতার পরিণতি কী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে দেশের মানুষ অপেক্ষা করছে—এই অন্ধকার অধ্যায়ের প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে কি না।
Nema komentara