close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

সারা দেশে এনবিআর কর্মকর্তাদের কলম বিরতি ঘোষণা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চেয়ারম্যান অপসারণসহ সংস্কার দাবিতে মঙ্গলবার ও বুধবার সারাদেশে ৩ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করবেন এনবিআর কর্মকর্তারা। স্থবির হয়ে পড়তে পারে রাজস্ব আদায় কার্যক্রম।..

সারা দেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীনে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আগামীকাল মঙ্গলবার ও পরশু বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত, প্রতিদিন তিন ঘণ্টার কলম বিরতি কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁদের দাবি— এনবিআর চেয়ারম্যানকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানের ভেতরে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কাটাতে প্রয়োজনীয় সংগঠনিক ও নীতিগত সংস্কার আনতে হবে।

এই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন সারা দেশের আয়কর, শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সূত্রে জানা গেছে, এ আন্দোলনের পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ, বিশেষ করে এনবিআর চেয়ারম্যানের নীতিনির্ধারণী কর্মকাণ্ড ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে দূরত্বের বিষয়গুলো। 

বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, বর্তমান চেয়ারম্যান কর্মকর্তাদের মতামতকে উপেক্ষা করে একক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং দীর্ঘদিন ধরে কর্মপরিবেশের উন্নয়নের বদলে সৃষ্টি হয়েছে অসন্তোষ। একজন সিনিয়র ভ্যাট কর্মকর্তার ভাষায়, “আমরা যে রাজস্ব সংগ্রহের গুরুদায়িত্ব পালন করি, তার সম্মান তো দূরের কথা, আমাদের নিজস্ব দাবিদাওয়াগুলো পর্যন্ত শুনা হয় না। এটা আর মেনে নেওয়া যায় না।”

কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে স্বেচ্ছা কর্মবিরতি পালন করবেন এবং কোন ফাইল প্রসেস করবেন না, কোনও করদাতার সেবা প্রদান করা হবে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এনবিআরের প্রতিদিনের কর্মবিরতি কার্যক্রমে দেশের রাজস্ব ব্যবস্থায় তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়তে পারে। আয়কর ও ভ্যাট সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম থেমে গেলে করদাতাদের ফাইল অনুমোদন, রিটার্ন যাচাই, ট্যাক্স রিফান্ডসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ সেবা ব্যাহত হবে।

ঢাকার একজন সিনিয়র কর পরামর্শক বলেন, “সরকারি ছুটি না থাকলেও এনবিআরের সার্ভিস বন্ধ হয়ে গেলে করদাতারা ভোগান্তিতে পড়বেন। এটা যদি নিয়মিত হতে থাকে তাহলে রাজস্ব খাতে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হতে পারে।”

এই আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন এনবিআরের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা, যারা একটি যৌথ প্ল্যাটফর্মে একত্রিত হয়েছেন। তারা জানান, এটা রাজনৈতিক কোনো সিদ্ধান্ত নয় বরং অভ্যন্তরীণ সংস্কার ও কর্মপরিবেশ উন্নয়নের দাবি থেকেই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

তারা স্পষ্ট করে বলেন, “আমাদের একটাই দাবি— নেতৃত্বে পরিবর্তন চাই, যেখানে গণতান্ত্রিক আচরণ থাকবে, কর্মকর্তাদের মূল্যায়ন থাকবে, মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এটি পেশাগত মর্যাদার লড়াই, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আন্দোলন।”

তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে আরও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে, এমনকি লাগাতার কর্মবিরতিও দিতে পারেন। তাদের ভাষায়, এটা তো শুধু শুরু। আমরা প্রয়োজনে রাজস্ব আদায় পুরোপুরি স্থগিত করতে পারি।

সরকার বা এনবিআরের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে প্রশাসনিক সূত্রগুলো বলছে, পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা চলছে এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি