সাংবাদিকদের দায়িত্ব ও পেশাগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একটি পূর্ণাঙ্গ অধ্যাদেশ প্রণয়নের বিষয় বিবেচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা ও দায়িত্বের গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য ঐতিহাসিক কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করছে।”
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠককালে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বৈঠকে দুই দেশের গণমাধ্যম ও তথ্য বিনিময়ের নানা দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপদেষ্টা জানান, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ইতোমধ্যে বেশ কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সাংবাদিকদের দায়িত্ব ও নিরাপত্তা বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ আনার কাজ চলছে।
তিনি বলেন, "গণমাধ্যম পেশা বর্তমানে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। সঠিক সাংবাদিকতা ও জনস্বার্থে তথ্য পরিবেশন নিশ্চিত করতে সরকার একটি নীতিমালা ভিত্তিক কাঠামো তৈরি করতে চায়, যেখানে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা যেমন থাকবে, তেমনি তাদের দায়িত্বশীলতাও নির্ধারিত হবে।”
এ সময় উপদেষ্টা জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে। সেগুলো বিভিন্ন গণমাধ্যমে সম্প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে কিছু মূল্যবান প্রকাশনাও তৈরি করা হয়েছে।”
আগামী ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আরও কিছু নতুন প্রামাণ্যচিত্র ও প্রকাশনা প্রকাশের পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
বৈঠকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বাংলাদেশের গণমাধ্যম খাতের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, “বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশ এই বছর উন্নতি করেছে, যা প্রশংসনীয়।” এ উন্নতির জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
হাইকমিশনার আরও বলেন, ব্রিটিশ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীলতা বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান এবং গণমাধ্যম উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
সাক্ষাতে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা এবং হাইকমিশনার ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি এলি বুট।
এই বৈঠকটি শুধু একটি কূটনৈতিক সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল না, বরং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে গণমাধ্যম খাতে উন্নয়ন ও সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে যদি সত্যিই এই অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা হয়, তবে সাংবাদিক সমাজের জন্য এটি হতে পারে একটি যুগান্তকারী মাইলফলক।