close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সাবেক ডিজিএফআই প্রধানের কোটি টাকার সম্পদ ক্রো'ক

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান মেজর জেনারেল সাইফুল আলম ও তার স্ত্রীর নামে কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেছে আদালত। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে চ..

বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি আলোচিত দুর্নীতির অধ্যায় উন্মোচিত হলো। দেশের প্রধান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই)–এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী লুবনা আফরোজ–এর নামে থাকা কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক করেছে আদালত। একইসঙ্গে ফ্রিজ করা হয়েছে তাদের তিনটি ব্যাংক হিসাব।

মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫ — ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর আবেদনের ভিত্তিতে এই আদেশ দেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, আদালতের আদেশে আশুলিয়ার ৯ তলা বাড়ি, পল্লবীর একটি ফ্ল্যাট, এবং ২৩ শতাংশ জমি ক্রোক করা হয়েছে। এসব সম্পদের মোট মূল্য ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা

দুদকের উপপরিচালক তাহাসীন মুনাবীল হক আদালতে এই আবেদন উপস্থাপন করেন। আবেদনে বলা হয়, মেজর জেনারেল সাইফুল আলম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, ও জানা আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের অনুসন্ধান চালাতে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে।

অনুসন্ধান চলাকালে দুদক জানতে পারে যে, অভিযুক্ত পরিবারের সদস্যরা ব্যাংক হিসাবের অর্থ অন্যত্র স্থানান্তর বা গোপনে লেনদেনের চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি তারা সম্পদ ক্রোক এড়াতে ‘হেবা দলিল’ (দানের দলিল) ব্যবহার করে সম্পত্তি স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে স্থানান্তরের চেষ্টা করেছেন।
এই ধরনের আচরণে সুষ্ঠু তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে বলে দুদক আদালতের কাছে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করে।

আদালতের আদেশে শুধু জমি ও বাড়ি নয়, একইসঙ্গে তাদের তিনটি ব্যাংক হিসাবও ফ্রিজ করা হয়েছে, যাতে করে কোনো ধরনের অর্থ লেনদেন বা স্থানান্তর না করতে পারে।
দুদকের মতে, সম্পদের উৎস, হস্তান্তর ও লেনদেন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ এবং অপরাধের সূত্র উদঘাটনে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনা নতুন নয়, তবে এটি আবারো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরাও কতটা সহজেই ক্ষমতার অপব্যবহারে জড়িয়ে পড়েন।
ডিজিএফআই-এর মতো সংস্থার সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ প্রমাণ করে দেয়, দেশের উচ্চ পর্যায়ের জবাবদিহিতা কতটা জরুরি।

যদিও এখনো অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে, তবে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে সম্পদ ক্রোক ও হিসাব ফ্রিজ করার সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয় বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে তারা আরও বলছেন, তদন্ত যেন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ এবং দ্রুত সম্পন্ন হয়।

মেজর জেনারেল সাইফুল আলম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগের অনুসন্ধান প্রমাণ করে দিয়েছে—দুর্নীতির কালো ছায়া উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও যথাযথ বিচারই হতে পারে ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ

Walang nakitang komento