close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

রোম নয়, ওমানেই হবে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক উত্তেজনার 'সিদ্ধান্তমূলক' আলোচনা!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পারমাণবিক উত্তেজনা যখন চরমে, তখন রোম নয় বরং ওমানেই হবে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী গোপন বৈঠক। ওবামার কূটনীতি ও ট্রাম্পের হুমকি—সবকিছু মিলিয়ে জ্বলছে মধ্যপ্রাচ্যের মাটি। বিস্তারিত জানতে পড়ুন—..

পারমাণবিক কর্মসূচিকে ঘিরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বহুদিন ধরে চলমান উত্তেজনা নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে। প্রথমে ধারণা করা হচ্ছিল, আলোচনার পরবর্তী ধাপ অনুষ্ঠিত হবে ইতালির রোমে। তবে ইরান হঠাৎ করেই সেই ধারণায় পরিবর্তন এনেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, পরবর্তী দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে ওমানেই।

এই পরিবর্তন এসেছে এমন এক সময়ে, যখন পারমাণবিক ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা আবারও চরমে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য একটি সংঘর্ষ এড়াতে এই বৈঠক হতে পারে ‘শেষ সুযোগ’।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই জানান, আলোচনার নতুন ভেন্যু হবে ওমান। তবে তিনি এর বেশি কিছু জানাতে রাজি হননি।

এদিকে হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমার মনে হচ্ছে, ওরা (ইরান) শুধু আমাদের সময় নষ্ট করছে।”

ট্রাম্প এর আগেও ইরানকে একাধিকবার সামরিক হামলার হুমকি দিয়েছেন, যদি কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে কোনো সমাধান না আসে। তার মতে, ইরানকে অবশ্যই পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগ করতে হবে—না হলে এর চরম মূল্য দিতে হবে। “আমি চাই ইরান একটি সমৃদ্ধ দেশ হোক, কিন্তু র‍্যাডিকাল শাসনে তারা পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হতে পারে না,” বলেন ট্রাম্প।

অন্যদিকে, ইরান বারবার সতর্ক করে আসছে যে, যদি আলোচনায় কাঙ্ক্ষিত ফল না আসে, তবে তারা অস্ত্রমানব উপযোগী ইউরেনিয়াম মজুদের পথেই হাঁটবে।

🔍 বিভ্রান্তি ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

এই আলোচনার ভেন্যু নিয়ে শুরু হয়েছে বিভ্রান্তি। এর আগে আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক মহল থেকে দাবি করা হয়েছিল, পরবর্তী দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে রোমে। এমনকি ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি জানান, “ওমানের অনুরোধে ইতালি আলোচনার জন্য ভেন্যু দিতে সম্মত হয়েছে।” তবে শেষ পর্যন্ত তেহরান থেকে ওমানের নাম ঘোষণার পর সেই সম্ভাবনার ইতি ঘটে।

তাজানি আরও বলেন, “পারমাণবিক ইস্যুতে যেকোনো ইতিবাচক অগ্রগতি বয়ে আনতে পারে এমন বৈঠক আমরা স্বাগত জানাই।”

ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্পও জানিয়েছিলেন, আলোচনার স্থান রোমেই হওয়ার কথা। এমন পরিস্থিতিতে, ভেন্যু পরিবর্তন ঘিরে দুই দেশের মধ্যকার আলোচনাকে ঘিরে অস্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক কৌশলের গন্ধ পাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

🌍 ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত

প্রায় ৫০ বছরের শত্রুতা ও অবিশ্বাসের ইতিহাস ঘিরে দুই দেশের মধ্যে যে কোনো আলোচনা এখন ভীষণভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে গত সপ্তাহেই ওমানে প্রথম দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী রাউন্ডের স্থান পরিবর্তন বহু অর্থ বহন করে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

তেহরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওমান তাদের দীর্ঘদিনের ‘বিশ্বস্ত মধ্যস্থতাকারী’। ফলে সেখানে আলোচনা হলে গোপনীয়তা বজায় রাখা এবং কার্যকর সমাধানের পথ খোঁজা সহজ হবে বলে তারা মনে করে।

🔎 জাতিসংঘের ভূমিকা

এই পরিস্থিতির মধ্যে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই তিনি ইরান সফরে যাচ্ছেন। তার এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হবে—ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।

এই সফর এবং ওমানে অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী আলোচনার ফলাফল—দুইয়ের উপর নির্ভর করছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ভবিষ্যৎ।


শেষ কথা:
একদিকে ওমানে গোপন আলোচনা, অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রকাশ্য হুমকি—সব মিলিয়ে বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে এই আলোচনা ঘিরে কী নাটকীয় মোড় নেয়। রোম নয়, ওমান—এই পরিবর্তন যদি প্রকৃত সমাধানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়, তবে তা হবে মধ্যপ্রাচ্য তথা বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য বড় স্বস্তির বার্তা।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator