বাংলাদেশের শরণার্থী ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কক্সবাজারের ক্যাম্পে বসবাসরত প্রত্যেক রোহিঙ্গা শরণার্থী ১২ ডলার এবং ভাসানচরের বাসিন্দারা ১৩ ডলার করে মাসিক খাদ্য সহায়তা পাবেন।
সাহায্যের পরিমাণ ও পরিবর্তন
আগে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য জনপ্রতি বরাদ্দ ছিল সাড়ে ১২ ডলার, যা সামান্য কমিয়ে ১২ ডলার করা হয়েছে। অন্যদিকে, ভাসানচরের শরণার্থীরা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি অর্থাৎ ১৩ ডলার করে পাবেন।
প্রাথমিক সংকট ও সমাধান
ডব্লিউএফপি গত ৫ মার্চ এক চিঠিতে জানায়, তহবিল সংকটের কারণে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা এপ্রিল থেকে কমিয়ে জনপ্রতি মাত্র ৬ ডলার করার পরিকল্পনা ছিল। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সংকট মারাত্মকভাবে বেড়ে যেত।
তবে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ১৪ মার্চ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং বাস্তব পরিস্থিতি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন। এরপরই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ডব্লিউএফপি আগের তুলনায় কিছুটা কম হলেও তুলনামূলকভাবে গ্রহণযোগ্য পরিমাণ খাদ্য সহায়তা নিশ্চিতের ঘোষণা দেয়।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, ‘ডব্লিউএফপি নতুন সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। এটি অবশ্যই আশার খবর, কারণ রোহিঙ্গাদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা বজায় থাকছে।’
রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তহবিল সংগ্রহে চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে খাদ্য সহায়তা নির্ভর করবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনুদান ও সহযোগিতার ওপর। একইসঙ্গে, রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবনমান নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ ও দাতাসংস্থাগুলোর সহায়তা অব্যাহত রাখা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।



















