close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মি বড় সমস্যা : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ‘অদৃশ্য শত্রু’ আরাকান আর্মি! জটিল সংকটে বাংলাদেশ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি বাস্তবায়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আরাকান আর্মি। সরাসরি কথা বলাও সম্ভব নয়, আবার উপেক্ষাও ..

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ এখন এক চরম দোদুল্যমান পরিস্থিতির মুখোমুখি। একদিকে মানবিক ও কূটনৈতিক চাপ, অন্যদিকে নিরাপত্তার প্রশ্নে সংকটে পড়েছে রাষ্ট্র। এই জটিলতার কেন্দ্রে উঠে এসেছে একটি শক্তিশালী নাম—আরাকান আর্মি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট করে বলেছেন, এই গোষ্ঠী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বড় রকমের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।

১৮ এপ্রিল শুক্রবার, ফরেন সার্ভিস ডে উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন।

“বাংলাদেশ এখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এক ধরনের দ্বৈত সংকটে আছে। আমরা না পারছি আরাকান আর্মির সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে, না পারছি তাদের পুরোপুরি এড়িয়ে যেতে,” বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বার্থে প্রয়োজনে অরাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও আলোচনায় বসার বিষয়টি বিবেচনায় আনা যেতে পারে। কারণ, প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নে তাদের প্রভাব ও কার্যকারিতা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।


প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে আরও সক্রিয় হতে হবে দূতাবাসকে

এই অনুষ্ঠানে তৌহিদ হোসেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যা ও অভিজ্ঞতা নিয়েও বিশদ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, দূতাবাসের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও মানুষকে সেবা দেওয়াই হতে হবে প্রধান অগ্রাধিকার। বিশেষ করে বিদেশে কর্মরত প্রবাসীদের নানা সমস্যার সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

“আমাদের দেশ থেকেই প্রায় ৮০ শতাংশ সমস্যা তৈরি হয় কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে,” মন্তব্য করেন তিনি।
“এই সমস্যাগুলো পরে দূতাবাসকে সামলাতে হয়। যদি প্রশিক্ষণ ও সঠিক শিক্ষা দিয়ে কর্মী পাঠানো যেত, তাহলে প্রবাসীদের সমস্যা কমতো এবং মিশনের ওপর চাপও অনেকটা হ্রাস পেত।”


রেমিট্যান্সে দূতাবাসের ভূমিকা এবং গর্বিত ইতিহাস

রেমিট্যান্স প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তুলে ধরেন অতীত ও বর্তমানের একটি চিত্র। তিনি বলেন,

“১৯৮০-এর দশকে আমাদের রপ্তানি ছিল মাত্র এক বিলিয়ন ডলার, এখন তা দাঁড়িয়েছে ৬০ বিলিয়ন ডলারে। এর পেছনে কিছুটা হলেও আমাদের দূতাবাসগুলোর সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে।”

এক কোটি প্রবাসী যারা বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছেন, তাদের প্রতি দূতাবাসের দায়িত্ব আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।


ফরেন সার্ভিসের মুক্তিযুদ্ধকালীন অবদান

আলোচনার এক পর্যায়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফিরে যান দেশের গর্বিত ইতিহাসে।

“১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল, মাত্র ৬৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে কলকাতায় গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন। সেখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বৈশ্বিক জনমত তৈরির কাজ শুরু করেন ফরেন সার্ভিসের কর্মকর্তারা।”

এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেই তিনি বলেন, ফরেন সার্ভিসকে শুধু কূটনীতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবেই না দেখে এটিকে জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় এক প্রধান হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহার করতে হবে।


 

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, প্রবাসী সেবা, রেমিট্যান্স এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি—সবই বর্তমানে একে অন্যের সঙ্গে জটিলভাবে জড়িত। এই বাস্তবতায় আরাকান আর্মির মতো শক্তির উপস্থিতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। এখন সময়, বাস্তবতাকে স্বীকার করে, জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে কৌশল নির্ধারণের।

Inga kommentarer hittades


News Card Generator