close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সীমান্ত দুর্নীতির বড় ভূমিকা, সতর্ক করলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা


বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ থামানো যেন এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, সীমান্তে ব্যাপক দুর্নীতি এবং রাষ্ট্রবহির্ভূত শক্তির (নন-স্টেট অ্যাক্টর) নিয়ন্ত্রণের কারণে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা বিভিন্ন সীমান্ত পথ ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে, আর এটি প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদ হোসেন এসব মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, গত দুই মাসে রাখাইন থেকে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তবে, বাংলাদেশ সরকার আর কোনো রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দেয়নি, এবং তা আনুষ্ঠানিকভাবেও হয়নি। "তবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, যেখানে আমরা তাদের ঢুকতে বাধা দিতে পারিনি," তিনি আরও যোগ করেন।
তিনি সীমান্তে দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, "এটি সত্যি যে সীমান্তে ব্যাপক দুর্নীতি রয়েছে। রোহিঙ্গারা নানা পথ ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। তবে একক সীমান্ত পথ দিয়ে তারা ঢুকছে না, বিভিন্ন পথ ব্যবহৃত হচ্ছে।" তৌহিদ হোসেন জানান, সীমান্তে দুর্নীতি রোধ করতে এবং রোহিঙ্গা প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা প্রয়োজন।
এছাড়া, তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের তরুণ প্রজন্ম আরও বেশি সমস্যার সৃষ্টি করবে। "আগামী ৫ বছরে যেসব তরুণ রোহিঙ্গার বয়স ২০ বছর হবে, তারা হয়তো আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে," তিনি বলেন, "যদিও এই পরিস্থিতি শুধু আমাদের জন্য নয়, বরং পুরো অঞ্চলের জন্যই সমস্যা সৃষ্টি করবে।"
থাইল্যান্ডের ব্যাংকক শহরে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, সেখানে রোহিঙ্গা সমস্যা এবং মিয়ানমারের ভবিষ্যত রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, "এই সমস্যার সমাধান না হলে মিয়ানমারে শান্তি আসবে না, এবং আগামী দশ বছরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।"
তিনি আরো জানান, ওই বৈঠকে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, লাওস, চীন, থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নেন এবং তারা মিয়ানমারের সীমান্ত নিরাপত্তা, অপরাধ এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তৌহিদ হোসেন বলছেন, এই সংকট মোকাবেলা করতে বাংলাদেশের একক প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়; আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন যাতে সীমান্তে চলমান দুর্নীতি ও অনুপ্রবেশের প্রবাহ বন্ধ করা যায়।
No comments found