রংপুরের হাসপাতাল নেপাল-ভুটানের জন্য উন্মুক্ত থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রংপুরে নির্মাণাধীন এক হাজার শয্যার সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়—নেপাল ও ভুটানের রোগীদের জন্যও উন্মুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই উদ্যোগ দক্ষিণ এশি..

রংপুরে নির্মাণাধীন এক হাজার শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল ভবিষ্যতে শুধু বাংলাদেশের জনগণের সেবার জন্যই নয়, বরং প্রতিবেশী দেশ নেপাল ও ভুটানের রোগীদের চিকিৎসার জন্যও উন্মুক্ত থাকবে—এমন ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “আমরা আঞ্চলিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও যৌথ সমৃদ্ধিতে বিশ্বাস করি। স্বাস্থ্যখাতে পারস্পরিক সহযোগিতা আমাদের অঞ্চলকে আরও বেশি সুসংহত ও মানবিক করে তুলবে।”

সোমবার (১২ মে) ঢাকায় অবস্থিত নেপাল দূতাবাস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বর্তমানে বাংলাদেশ সফররত নেপালের ফেডারেল পার্লামেন্টের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ডেপুটি স্পিকার ইন্দিরা রানার সঙ্গে।

ড. ইউনূস এ সময় বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা, অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতে আমাদের যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য—এই পুরো অঞ্চলকে ঘিরে একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করলে আমাদের সম্মিলিতভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকবে। আলাদাভাবে নয়, একত্রে কাজ করাই হবে ভবিষ্যতের চাবিকাঠি।”

এ সময় আলোচনায় গুরুত্ব পায় বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বিদ্যুৎ সহযোগিতা সম্পর্কিত বিষয়ও। উভয় পক্ষের আলোচনায় উঠে আসে, সম্প্রতি স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-নেপাল-ভারত ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ চুক্তি। এই চুক্তির আওতায় ভারতের বিদ্যুৎ গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই উদ্যোগ আরও বড় আকারে সম্প্রসারিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন দুই পক্ষই।

ডেপুটি স্পিকার ইন্দিরা রানা বলেন, “নেপাল বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সব খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণে আগ্রহী। আমরা চাই দুই দেশের সংসদ সদস্যরাও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করুক। এই সহযোগিতা আমাদের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করবে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৭০০ জন নেপালি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত, যাদের বেশিরভাগই মেডিকেল কলেজে পড়ছে। তিনি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রশংসা করে বলেন, “আমরা চাই আরও বেশি একাডেমিক সহযোগিতা হোক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনিময় বাড়ুক।”

দুই দেশের মধ্যে অবকাঠামোগত সংযোগ এবং চলাচলের উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, “নেপালের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ উন্নত হলে শুধু মানুষের যাতায়াতই সহজ হবে না, আঞ্চলিক বাণিজ্যের খরচও অনেকটা কমে আসবে।”

এ সৌজন্য সাক্ষাতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ইসরাত জাহান।

এই বৈঠকটি শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নয়, বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সংহতি, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং মানবিক সহযোগিতার দিক নির্দেশনায় এক নতুন অধ্যায় রচনা করতে পারে—এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

コメントがありません