close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

রংপুরে জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলা, অভিযোগ বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি। ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ভাঙচুর ও আগুন দেয় কাদেরের বাড়ির সামনে। তবে পাল্টা দাবি করেছে আ..

রংপুরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হঠাৎই তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য জি এম কাদেরের বাড়ি, “দ্য স্কাই ভিউ”, ছিল সংঘর্ষ ও ধ্বংসযজ্ঞের এক প্রত্যক্ষ সাক্ষী।

ঘটনার সময় তার বাড়ির জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয় এবং একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে অভিযোগ জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে। দলটির পক্ষ থেকে এই হামলার জন্য সরাসরি দায়ী করা হয়েছে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের

ঘটনার পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় দুই পক্ষের মাঝে। জি এম কাদের নিজে সেদিন বিকেলে ঢাকা থেকে রংপুরে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন। তার কিছু সময় পরেই ঘটে এই হামলার ঘটনা।


হামলার পরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রংপুর নগরী

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড় এলাকায় জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তারা সরাসরি এগিয়ে যান জি এম কাদেরের বাসভবনের দিকে।

হঠাৎ করেই দ্য স্কাই ভিউ ভবনের সামনে হইচই ও উত্তেজনা শুরু হয়। তারপরই শুরু হয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। পরিস্থিতি এতটাই দ্রুত ঘোরালো হয় যে, স্থানীয় বাসিন্দারাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

জাতীয় পার্টির সহ-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান সরাসরি এই ঘটনার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং এনসিপি কর্মীদের দায়ী করেন। তিনি বলেন, “এই হামলা পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতার উপর চাপ সৃষ্টির জন্য করা হয়েছে।”


পাল্টা অভিযোগ: ছাত্র আন্দোলনের দাবি তারা নয়, বরং ভিকটিম

অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “আমরা ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করছিলাম। কিন্তু জাতীয় পার্টির লোকজন আমাদের উপরই হামলা চালায়। ঘটনার সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে ঠিকই, তবে কাদেরের বাড়িতে হামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্যই বৈষম্যবিরোধিতা। এই ঘটনার মাধ্যমে আমাদের দমন করার অপচেষ্টা চলছে।”


 তদন্ত দাবি, সতর্ক অবস্থানে প্রশাসন

ঘটনার পর থেকেই রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা করা হয়নি, তবে তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “দুই পক্ষের বক্তব্য আমরা নিচ্ছি। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। হামলা ও অগ্নিসংযোগের বিষয়টি যাচাই করে দেখা হচ্ছে।”


রাজনীতির নামে সহিংসতা?

এ ঘটনাকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। একজন শহরবাসী বলেন, “রাজনীতি করুক, কিন্তু বাসায় এসে হামলা করা মানে তো মানুষের নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলা। এসব বন্ধ হওয়া উচিত।”

সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতিতে যে চরম বিভাজন, এই ঘটনা যেন তারই বহিঃপ্রকাশ। সরকারপন্থী বা বিরোধী দল যেই হোক না কেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও শান্তি যেন ব্যাহত না হয়, এই দাবি এখন শহরজুড়ে।


 

জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনাটি শুধু একজন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে নাকি একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক সন্ত্রাস— সেটিই এখন মূল প্রশ্ন। তদন্ত শেষে হয়তো আসল সত্য সামনে আসবে, তবে এই মুহূর্তে রংপুরজুড়ে আতঙ্ক, উত্তেজনা ও রাজনৈতিক পারদ চরমে।

এখন দেখার বিষয়— এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও কোনো সহিংসতা তৈরি হয় কিনা, নাকি প্রশাসন যথাযথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

Geen reacties gevonden