আজকের ম্যাচ ছিল যেন এক যুদ্ধ, যার ফলাফল নির্ধারণ করে দিতে পারে বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন ইতিহাস। মিয়ানমারের বিপক্ষে এই ম্যাচ জিতলেই এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। আর সেই লক্ষ্যে দুর্দান্ত সূচনা করেছে পিটার বাটলারের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল।
ম্যাচের শুরু থেকেই দারুণ আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে খেলতে নামে লাল-সবুজের দল। প্রথম থেকেই স্পষ্ট ছিল—তারা শুধু খেলতে নয়, জিততেই এসেছে মাঠে। আর সেই প্রত্যাশাকে বাস্তবে রূপ দেন ঋতুপর্ণা চাকমা। ম্যাচের মাত্র ১৯তম মিনিটেই এক চমৎকার আক্রমণ থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন তিনি।
ঋতুপর্ণার এই গোল শুধু একটি গোল নয়—এটি বাংলাদেশের ফুটবলে একটি সম্ভাবনার জানালা খুলে দিল। এই গোলের পর পুরো দল আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। মাঠে তাদের পাসিং, দৌড়, বল কন্ট্রোল—সবকিছুতেই ছিল আত্মবিশ্বাসের ছাপ।
দলের রক্ষণভাগও ছিল কঠোর পাহারায়। মিয়ানমারের একের পর এক আক্রমণ ফিরিয়ে দিয়েছে গোলকিপার এবং ডিফেন্ডাররা মিলেমিশে। পিটার বাটলার এই ম্যাচের জন্য যে পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন, তা যেন বাস্তবেই নিখুঁতভাবে কার্যকর হচ্ছে।
এই ম্যাচকে ঘিরে আগে থেকেই ছিল উত্তেজনা। দেশের কোটি ভক্তদের চোখ ছিল টিভি পর্দায়। সবাই অপেক্ষা করছিল এক ঐতিহাসিক ফলাফলের। আর সেই ইতিহাস গড়ার শুরুটা হলো এক অসাধারণ গোলে।
ঋতুপর্ণা চাকমা, যিনি একসময় ছিলেন একটি নিরব, ত্যাগী ফুটবলার, আজ সেই তিনিই দেশের সামনে এনে দিয়েছেন বড় এক সম্ভাবনা। তার পায়ে ভর করেই বাংলাদেশের স্বপ্ন এখন আরও উঁচুতে।
ম্যাচটি জিততে পারলে বাংলাদেশের এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার রাস্তাটি অনেকটাই সুগম হবে। এটি হবে দেশের ফুটবলে এক নতুন মাইলফলক। এর আগে কখনও এতো কাছাকাছি এসে বাংলাদেশ দল এত বড় মঞ্চে খেলার সুযোগ পায়নি।
আজকের জয় শুধু একটি স্কোরলাইন নয়, এটি ফুটবল উন্নয়নের একটি দিকচিহ্নও। বাফুফে সূত্র বলছে, ম্যাচ শেষে বড়সড় উদযাপনের প্রস্তুতি রয়েছে, যদি দল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
ঋতুপর্ণার গোল বাংলাদেশকে এগিয়ে দিয়েছে, তবে সামনে এখনো ৭০ মিনিটের লড়াই বাকি। তবে ম্যাচের গতিপ্রবাহ দেখে মনে হচ্ছে—এই ম্যাচে ইতিহাস রচনার সমস্ত উপাদানই বাংলাদেশের হাতে আছে। এখন শুধু প্রয়োজন ধৈর্য আর শেষ বাঁশির আগ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত খেলা।
পিটার বাটলারের চোখে আজ একটাই লক্ষ্য—এশিয়ান কাপ। আর বাংলাদেশের কোটি ভক্তের হৃদয়ে এখন বাজছে একটিই সুর—“আমরা পারি!”