রামপুরায় এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার জন্ম দিলেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের তৃতীয় স্ত্রী রিয়ামনি ও বার ড্যান্সার ম্যাক্স অভি রিয়াজ। গোপন অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে এলাকাবাসী তাদের হাতেনাতে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
শনিবার দুপুরে রামপুরার উলন রোডের একটি বাসায় হঠাৎ হাজির হন হিরো আলম। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি সেখানে যান। এরপরই দৃশ্যপটে আসে উত্তেজনাকর সব মুহূর্ত। হিরো আলম বাসার ভিতরেই রিয়ামনি ও অভিকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান বলে দাবি করেন। পরে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি ও তুমুল বিশৃঙ্খলা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ প্রথমে বার ড্যান্সার ম্যাক্স অভিকে একটি গাড়িতে তোলে। কিছুক্ষণ পর রিয়ামনিকেও গাড়িতে তোলা হয়। এই সময় চারপাশে জড়ো হয়ে যান উত্তেজিত এলাকাবাসী। তারা “ভুয়া ভুয়া” বলে চিৎকার করতে থাকেন। দৃশ্যটি যেন রীতিমতো জনরোষের প্রতিফলন।
ঘটনার পর হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, “আমি তাদের হাতেনাতে ধরেছি। আমার সঙ্গে এখনো ডিভোর্স হয়নি রিয়ামনির। অথচ সে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়েছে ম্যাক্স অভির সঙ্গে।” তিনি জানান, ওই ফ্ল্যাটটি তিনি ভাড়া নিয়েছিলেন। এলাকাবাসী বারবার অভিযোগ করতেন, কিন্তু এবার তিনি নিজেই ধরা খান।
তবে এখানেই শেষ নয়। হিরো আলম দাবি করেন, রিয়ামনি ও অভির সম্পর্ক বহুদিনের, এবং তার অফিস স্টাফ সেলিমও জানিয়েছেন, নিয়মিতই অভি আসতেন ওই বাসায়। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এই সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ জমে ছিল।
ঘটনার সময় উত্তেজিত রিয়ামনি হিরো আলমকে হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রিয়ামনি ও অভিকে গণধোলাই দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে দুজনকেই উদ্ধার করে হাতিরঝিল থানায় নিয়ে যায়।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “রিয়ামনি ও ম্যাক্স অভি রিয়াজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং আজই আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
এর আগে গত এপ্রিলে হিরো আলম অভিযোগ করেছিলেন, তার বাবার মৃত্যুতে স্ত্রী রিয়ামনি কোনো ভূমিকা রাখেননি। তখনই তিনি তাকে ডিভোর্স দেওয়ার কথা বলেন। সেই সময় থেকেই রিয়ামনি-ম্যাক্স অভির সম্পর্কের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর অভির স্ত্রী ‘ইতিও’ প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলেন, “রিয়ামনির কারণেই আমার সংসার ভেঙেছে।” এমনকি হিরো আলম ও ইতি একত্রে সংবাদ সম্মেলনও করেন।
ভিডিওটি প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই নেটিজেনদের মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা। কেউ বলছেন, “গোপন সম্পর্ক ফাঁস হলে এমনটিই হয়।” আবার কেউ বলছেন, “আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক হয়নি।” অনেকে আবার হিরো আলমকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, “স্ত্রীর অধিকার রক্ষায় এটাই যথার্থ পদক্ষেপ।”
, রিয়ামনি ও ম্যাক্স অভির এ ঘটনাটি শুধুই একটি পারিবারিক কেলেঙ্কারি নয়, বরং এটি সামাজিক মূল্যবোধ ও আইনের মধ্যে দ্বন্দ্বের একটি বাস্তব উদাহরণ। ভিডিও, অভিযোগ, গ্রেফতার এবং আদালত—সবকিছু মিলিয়ে এটি এখন দেশের অন্যতম আলোচিত ঘটনা। সামাজিকমাধ্যমের কল্যাণে ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুত, এবং এর পরিণতি কী হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।