টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টির পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। আবহাওয়ার এমন অনিশ্চয়তার মাঝেই নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাস। সোমবার, ২৬ মে রাতের মধ্যেই দেশের অন্তত ১৩টি জেলায় ভয়াবহ ঝড়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানান, আজ রাত ১টার মধ্যে ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া, সঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এই ঝড়ের আশঙ্কায় এসব জেলার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সতর্ক না থাকলে ছোট নৌযান ও জেলেদের জন্য তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
সিলেটসহ বিভিন্ন অঞ্চলে টানা বর্ষণ, এখনো বাড়ছে তাপমাত্রা
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে সিলেটে — ১৪০ মিলিমিটার।
এছাড়া অন্যান্য জেলার বৃষ্টির পরিমাণও চোখে পড়ার মতো:
-
সাতক্ষীরা: ১০৮ মিমি
-
বগুড়া: ২৭ মিমি
-
ঈশ্বরদী (পাবনা): ২৬ মিমি
-
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও রাজশাহী: ২৪ মিমি
-
বান্দরবান: ২২ মিমি
-
সৈয়দপুর (নীলফামারী) ও দিনাজপুর: ২২ মিমি
বৃষ্টির ফলে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেলেও গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এখনো ৩৬ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। এ অবস্থায় আবার নতুন করে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা জনমনে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
সামনে কী অপেক্ষা করছে?
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ৫ দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কিছুটা কমে যেতে পারে। তবে এতে করে তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে, যা দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গরমের তীব্রতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশেষ করে যেসব জেলায় ইতোমধ্যে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে, সেসব এলাকায় নতুন করে ঝড়বৃষ্টির কারণে জীবনযাত্রা আরও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রস্তুতির আহ্বান
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসন, কৃষক, জেলে এবং সাধারণ জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিদ্যুৎ সংযোগ, পুরনো গাছ বা বিলবোর্ড, দুর্বল স্থাপনা—সব ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিয়েছে তারা।
এমন আবহাওয়ার পরিবর্তনশীল অবস্থায় সবার উচিত সময়মতো আপডেট জানা এবং যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা। বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে নদীপথ ব্যবহার হয়, সেসব এলাকায় দ্রুত সতর্কতা ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।
রাতের আঁধারে আসা এই ঝড় হঠাৎ করে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ডেকে আনতে পারে — তাই সচেতন থাকুন, নিরাপদ থাকুন।