রামদা হাতে শাকিব খানকে খুঁজছিলেন যুবক!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রামদা হাতে ঢুকে শাকিব খানকে খুঁজতে লাগলেন এক যুবক! দাবি, শাকিব তার টাকা মারছে! নাটকীয় এই ঘটনা এফডিসিতে এনে দিলো চরম উত্তেজনা—হাতেনাতে ধরা পড়লেন অভিযুক্ত, মামলা, তদন্ত, আর মানসিক ভারসাম্যহীনতার রহস্য..

এফডিসিতে রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি, চাপাতি হাতে যুবক তাণ্ডব চালালেন, খুঁজলেন সুপারস্টার শাকিব খানকে!

শনিবার (৩১ মে) সন্ধ্যার পর হঠাৎ করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। এক যুবক রামদা হাতে ঢুকে পড়েন এফডিসির ভেতর। তিনি তখন ভাঙচুরে লিপ্ত, আর চিৎকার করে একটাই কথা বলছেন—“শাকিব খান কোথায়? আমার টাকা দে!” এ ঘটনা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‌“ভয় পেয়েছিলাম সবাই। হঠাৎ এমন কিছু হবে ভাবিনি। ছুরি বা চাপাতি হাতে কাউকে দেখলেই ভয় লাগে, আর তিনি তো রীতিমতো রামদা নিয়ে ঢুকেছেন!”

পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার আগেই তৎপর হয় উপস্থিত শিল্পীরা। শুটিংয়ে থাকা এবং ‘প্রেমের তাজমহল’ খ্যাত নির্মাতা গাজী মাহবুব তখন ঘটনাস্থলেই ছিলেন। তিনি জানান—

 

একটা হট্টগোলের শব্দ শুনে বের হয়ে দেখি একজন যুবক রামদা নিয়ে ভাঙচুর করছে। বারবার শাকিব খানের নাম নিচ্ছে। তাকে জিজ্ঞাসা করি—কি হয়েছে? সে বলে, শাকিব খান তার পাওনা টাকা দেয়নি।”

ঘটনার পেছনে যুবকের দাবি ছিল—তিনি জামালপুরের বাসিন্দা এবং শাকিব খানের ‘গলুই’ সিনেমার শুটিংয়ে কোনো একভাবে কাজ করেছেন। কিন্তু কী ধরনের কাজ করেছেন বা কাদের সাথে কাজ করেছেন—সেই বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

গাজী মাহবুব বলেন—

 

আমরা বুঝতে পারছিলাম, সে মানসিকভাবে কিছুটা অস্থির। সে বলছিল, শাকিব খান আর এক কালো লোককে খুঁজছে। কিন্তু সে লোকের নাম বলতে পারছিল না। তারপর আমরা পুলিশে খবর দেই। তারা এসে তাকে গ্রেপ্তার করে।”

এরপর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ তাকে আটক করে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন রাতেই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

 

ঘটনার পর রোববার (১ জুন) তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এফডিসি কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাও দায়ের করে। তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, যুবকটি স্বাভাবিক নয়।

 

তার কথাবার্তা অসংলগ্ন। অনেক প্রশ্নের সঠিক উত্তর সে দিতে পারছিল না। মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন বলেই মনে হয়েছে। তবে যেহেতু মামলা হয়েছে, তাই আইনি প্রক্রিয়া মেনেই তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

এখন প্রশ্ন উঠছে, একজন ব্যক্তি কীভাবে নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে চাপাতি নিয়ে এফডিসির ভেতরে ঢুকে পড়লো? তার উদ্দেশ্য কী ছিল? সত্যিই কি টাকা পাওয়ার কোনো দাবি ছিল? নাকি এটি ছিল সম্পূর্ণ পরিকল্পিত নাটক? কিংবা একজন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মানুষের আকস্মিক উত্তেজনার বহিঃপ্রকাশ?

এই ঘটনার পর, চলচ্চিত্রপাড়া এবং এফডিসি ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন—শাকিব খান জনপ্রিয় নায়ক, তার অনেক ভক্ত আছে, আবার অনেকেই ক্ষোভ পোষণ করে থাকে। তাই তাকে ঘিরে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো উচিত।

এফডিসির মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন হামলা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। একজন মানুষ কীভাবে এভাবে প্রবেশ করে হুমকি দিতে পারে? সে মানসিক ভারসাম্যহীন কিনা, তা যাচাই করাও এখন সময়ের দাবি। এ ঘটনার পূর্ণ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক সত্য বের হওয়া প্রয়োজন—কারণ এটি শুধু শাকিব খান বা একজন যুবকের ইস্যু নয়, এটি নিরাপত্তা, শিল্প-সাহিত্য এবং সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের নিরাপত্তার প্রশ্ন।

No comments found


News Card Generator