close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

রাজশাহীতে বিএনপির সম্মেলনে হট্টগোল! নেতাকর্মীদের ভিড়ে ভেঙে পড়ল প্রধান মঞ্চ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ত্রিবার্ষিক কর্মী সম্মেলনে নেতাকর্মীদের অনিয়ন্ত্রিত ভিড়ের মুখে ভেঙে পড়ল রাজশাহীর বিএনপি মঞ্চ! প্রধান অতিথি নামার পরই ঘটে বিপত্তি—জানুন বিস্তারিত, কীভাবে একচুলের জন্য রক্ষা পেল শীর্ষ নেতারা।..

রাজশাহীতে বিএনপির ত্রিবার্ষিক কর্মী সম্মেলন এক রকম হুলস্থুল পরিস্থিতিতে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার (২০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নগরীর সপুরা এলাকার ইনডোর স্টেডিয়ামে বিএনপির শাহ মখদুম থানা শাখার আয়োজিত কর্মী সম্মেলনের মূল মঞ্চ নেতাকর্মীদের অতিরিক্ত চাপে হঠাৎ ভেঙে পড়ে। সৌভাগ্যবশত, এতে কেউ গুরুতর আহত না হলেও সম্মেলনস্থলে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা।

এই সম্মেলনের প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম। বিকেল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিট থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত হন।
সন্ধ্যার দিকে সম্মেলনের মূল বক্তব্য ও আলোচনাপর্ব শেষ করে প্রধান অতিথি মঞ্চ থেকে নামার পরই ঘটে ঘটনাটি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, মূল অনুষ্ঠান শেষ হতেই উত্তেজিত নেতাকর্মীরা দলে দলে মঞ্চে উঠে পড়তে শুরু করেন। আয়োজকদের নিষেধ উপেক্ষা করে একের পর এক নেতাকর্মী মঞ্চে ওঠায় মুহূর্তেই বাড়তে থাকে চাপ। এক পর্যায়ে মঞ্চের কাঠামো আর চাপ সহ্য করতে না পেরে ভেঙে পড়ে।

মঞ্চ ভেঙে পড়ার সময় সেখানে ছিলেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশীদ মামুনসহ আরো অনেক স্থানীয় নেতা। তবে কেউই তেমনভাবে আহত হননি বলে মামুনুর রশীদ নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, "আলহামদুলিল্লাহ, বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। নেতাকর্মীদের আবেগে একটু বিশৃঙ্খলা হয়েছিল মাত্র। সবাই নিরাপদে আছেন।"

এই ঘটনায় বিএনপির রাজশাহী মহানগর কমিটির প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এত বড় কর্মসূচির জন্য একটি অস্থায়ী কাঠামোর ওপর নির্ভর করাটা কতটা যৌক্তিক ছিল—তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যেও।

অনেকেই অভিযোগ করেছেন, আয়োজকদের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ করা হলেও উচ্ছ্বসিত কর্মীরা নির্দেশ মানেননি। কেউ কেউ আবার বলেন, দীর্ঘদিন পর তৃণমূল পর্যায়ে এমন একটি জমজমাট কর্মসূচিতে অংশ নিতে পেরে কর্মীদের আবেগ তুঙ্গে উঠেছিল। ফলে তারা মঞ্চে উঠে নেতাদের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন।

দায়িত্বরত একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “নিয়ন্ত্রণহীন ভিড়ের পেছনে কিছু নেতার ইন্ধনও ছিল। কেউ কেউ ইচ্ছে করেই কর্মীদের উসকে দিয়েছেন যাতে তাঁরা নেতার পাশে দাঁড়াতে পারেন। এতে হিতে বিপরীত হয়েছে।”
তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য না করে পরিস্থিতি শান্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

রাজশাহীতে এই সম্মেলন ছিল শাহ মখদুম থানা বিএনপির তিন বছর পর আয়োজন করা বড়সড় কর্মসূচি। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জাতীয় নির্বাচনের আগে দল গোছানোর ক্ষেত্রে এই সম্মেলনের গুরুত্ব ছিল অনেক বেশি।
বিএনপির তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের যোগাযোগ স্থাপন এবং সাংগঠনিক শক্তি পুনর্গঠনের কৌশল হিসেবেই এই আয়োজন করা হয়।

কিন্তু এমন একটি প্রতিকূল ঘটনায় কর্মসূচির সফলতা আংশিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে।

এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর রাজশাহী বিএনপি নতুন করে কর্মীদের আচরণ, নিরাপত্তা পরিকল্পনা এবং মঞ্চ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে।
যদিও বড় কোনো দুর্ঘটনা হয়নি, তবে এই ঘটনা যেন ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা হয় — সেটিই এখন প্রত্যাশা করছেন সচেতন নেতাকর্মীরা।

Walang nakitang komento