close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে যা বললেন প্রেস সচিব

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানালেন, রাজনীতিতে যাবেন না। দায়িত্ব শেষে ফিরবেন সাংবাদিকতা ও লেখালেখিতে। জুলাইয়ের গণজাগরণ নিয়েই কাটাতে চান তার বাকি জীবন।..

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অবশেষে খুলে বললেন নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ নিয়ে নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে তিনি জানালেন—রাজনীতি নয়, বরং তিনি ফিরতে চান লেখালেখি ও সাংবাদিকতার জগতে।

গতকাল বুধবার (২ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে শফিকুল আলম স্পষ্ট ভাষায় বলেন, রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কোনো ইচ্ছা তার নেই। তিনি লেখেন, “আমার অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব শেষ হওয়ার পর ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। কিছু বন্ধু বলছেন, আমি কোনো বড় রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে যাচ্ছি। কিন্তু সত্যি বলতে, আমি এমপি বা উচ্চপর্যায়ের কোনো রাজনৈতিক নেতার জীবন চাই না।”

তিনি আরও বলেন, “সিঙ্গাপুর বা ইউরোপের মতো দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, এখানে রাজনীতিতে নেতৃত্বে থেকে কোনো বড় অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যায় না, যদি না কেউ দুর্নীতির পথ বেছে নেয়।”

তাঁর বক্তব্যে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে—রাজনৈতিক জীবনকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মাঝে থাকা মোহভঙ্গ এবং সেইসঙ্গে সত্যিকার ও সাহসী চিন্তার একজন মানুষ হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ।

শফিকুল আলম জানিয়েছেন, দায়িত্ব শেষে তিনি লেখালেখিতে পুরোপুরি মনোযোগী হবেন। তার পরিকল্পনায় রয়েছে বেশ কিছু বই লেখার কাজ, যার মধ্যে অন্যতম হলো ২০১৩ সালের “জুলাই গণজাগরণ”। তিনি বলেন, “জুলাইয়ের গণজাগরণ নিয়ে লিখেই আমি পুরো জীবন কাটিয়ে দিতে পারি। আমার জীবনে এত স্বতঃস্ফূর্ত, সাহসী, সুন্দর ও ব্যাপক রাজনৈতিক আন্দোলন আর দেখিনি।”

এই লেখার মাধ্যমে তিনি শুধু নিজের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করেননি, তুলে ধরেছেন দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতাও। তিনি রবার্ট ক্যারোর উদাহরণ টেনে বলেন, “যেমন রবার্ট ক্যারো তার জীবন উৎসর্গ করেছেন লিন্ডন বি. জনসনের জীবন নিয়ে লেখায়, আমি তেমনি জুলাই বিপ্লব নিয়ে লিখেই জীবন কাটাতে পারি।”

তবে পোস্টের শেষ দিকে তিনি কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করে লেখেন, “গত কয়েক মাসে আমি আওয়ামী লীগের কর্মীদের কাছ থেকে প্রচুর হুমকি পেয়েছি। তবে মনে করি, এসব কিছু হতাশাগ্রস্ত মানুষের রাগান্বিত চিৎকার, যারা দেশের মানুষের কাছ থেকে শেষ জনপ্রিয়তাটুকুও হারিয়ে ফেলেছে।”

সবশেষে শফিকুল আলম লেখেন, “আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রাখি। তিনিই আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই আমাদের কাছে ফিরিয়ে নেবেন। আমি আমার অন্তর্বর্তীকালীন পরবর্তী জীবনপর্বের দিকে আশাবাদ নিয়ে তাকিয়ে আছি।”

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রেক্ষাপটে যেখানে অনেকেই ক্ষমতার স্বাদ পেতে চান, সেখানে শফিকুল আলমের এই সিদ্ধান্ত এক ভিন্নধর্মী বার্তা দেয়। রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থেকে সরে গিয়ে কলমের শক্তিকে বেছে নেওয়া নিঃসন্দেহে সাহসী পদক্ষেপ। তার লেখনী আগামী দিনে জাতিকে রাজনৈতিক চেতনার এক নতুন আলো দেখাবে বলেই আশা।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator