close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করতে প্রস্তুত ইরান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান জানালেন, ইরান প্রতিবেশীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও শান্তির নতুন অধ্যায় শুরু করতে চায়। পারস্য উপসাগরকে দেখছেন ভ্রাতৃত্বের প্রতীক হিসেবে।..

মধ্যপ্রাচ্যের ভৌগোলিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ বার্তা নিয়ে এগিয়ে এল ইরান। দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মসউদ পেজেশকিয়ান রোববার (২৯ জুন) মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ঘোষণা দিয়েছেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে প্রস্তুত ইরান।

এই বক্তব্য শুধু কূটনৈতিক নয়, বরং এটি ইরানের নীতিনির্ধারণে একটি মোড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত। পেজেশকিয়ান বলেন, “তেহরান বিশ্বাস করে পারস্য উপসাগর শুধু একটি ভৌগোলিক এলাকা নয়, এটি হলো শান্তি, সহযোগিতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক।”

তিনি আরও জানান, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (GCC) সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করা ইরানের অন্যতম অগ্রাধিকার। এমন সহযোগিতা শুধু ইরান নয়, বরং সমগ্র মুসলিম বিশ্বের জন্য শান্তি ও উন্নয়নের বার্তা বহন করে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান তার বক্তব্যে বলেন, “১২ দিনের যুদ্ধে আমাদের জাতীয় প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছে কেবল সর্বোচ্চ নেতার প্রজ্ঞাময় দিকনির্দেশনা ও নেতৃত্বে। তার প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।”

এই বক্তব্যে তিনি শুধু বর্তমান প্রশাসনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেননি, বরং দেশের ভিতরে ও বাইরে ইরানিদের ঐক্য এবং দেশপ্রেমের প্রশংসাও করেন।
ধর্মীয় নেতা, আলেম, শিক্ষাবিদ, লেখক, শিল্পী, গণমাধ্যমকর্মী ও প্রবাসী ইরানিদের অবদান আলাদাভাবে তুলে ধরে বলেন, “জাতীয় ঐক্য ও সংহতি রক্ষায় প্রবাসী ইরানিরা তাদের দায়িত্বশীলতা ও দেশপ্রেমের প্রমাণ দিয়েছেন। তাদের এই অবদান সত্যিই প্রশংসনীয়।”

পেজেশকিয়ান জানান, তার সরকারের অন্যতম মূলনীতি হবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও কার্যকর সম্পর্ক গড়ে তোলা। তিনি বলেন, “পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (GCC) সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় সহযোগিতার জন্য ইরান সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আমাদের নতুন প্রশাসনের লক্ষ্য হচ্ছে আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমন্বয় জোরদার করা।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বার্তা মূলত সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, ওমান এবং কুয়েতের দিকে ইঙ্গিত করে দেওয়া হয়েছে, যাদের সঙ্গে বিগত বছরগুলোতে ইরানের সম্পর্ক নানা টানাপোড়েনের মধ্যে ছিল। এখন পেজেশকিয়ানের নেতৃত্বে সেই সম্পর্ক মেরামত এবং উন্নয়নের নতুন দুয়ার খুলতে যাচ্ছে।

যদিও পুরো বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, তবে প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, পেজেশকিয়ান প্রশাসন কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে পুরোপুরি ‘না’ বলছে না, বরং কিছু নির্দিষ্ট শর্ত ও পারস্পরিক সম্মান বজায় রেখে সম্ভাব্য আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা এখনও আসেনি।

ইরানের এই কৌশলগত অবস্থান এবং নতুন প্রশাসনের শান্তির বার্তা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। যেখানে একের পর এক যুদ্ধ, সংকট ও বিভাজনের গল্প শোনা যাচ্ছে — ঠিক সেই মুহূর্তে ইরান এক সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে বন্ধুত্ব, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা দিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি ইরান সত্যি সত্যি এই নীতিতে অটল থাকে, তাহলে শুধু তেহরান নয়, গোটা অঞ্চলেই শান্তির নতুন সূর্য উদিত হতে পারে।

No se encontraron comentarios


News Card Generator