পরিষ্কার পানি সরবরাহ নিশ্চিতে ঢাকা ওয়াসাকে নির্দেশ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
হাইকোর্ট ওয়াসাকে অবিলম্বে পরিষ্কার পানি সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে। দুই মাসের মধ্যে ময়লা পানির বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশও দেওয়া হয়েছে।..

ঢাকা ওয়াসার নোংরা, পোকাযুক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি সরবরাহের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। রাজধানীবাসীর জীবনের সঙ্গে জড়িত এই গুরুতর বিষয়ে হাইকোর্ট ‘অবিলম্বে পরিষ্কার পানি সরবরাহের’ নির্দেশ দিয়েছে।

২০২৫ সালের ২৩ জুন (সোমবার) বিচারপতি হাবিবুল গনি এবং বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই নির্দেশনা দেন। একইসাথে দূষিত পানির বিষয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ও বিশদ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

এই গুরুত্বপূর্ণ রুল ও আদেশ এসেছে এক জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সালেকুজ্জামান সাগর গত মাসে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওয়াসার পানি দূষণ সংক্রান্ত খবরসমূহ যুক্ত করে এই রিট দায়ের করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন স্বয়ং রিটকারী আইনজীবী নিজেই।

তিনি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন,মানুষ প্রতিনিয়ত নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে। এটা সরাসরি জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। আদালত বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলামমাহফুজ বিন ইউসুফ

আদালত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাকে রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন:

  • স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (এলজিআরডি) সচিব

  • ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (MD)

  • উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ)

  • স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব

  • স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

বিচারপতিরা তাদের আদেশে উল্লেখ করেন,পরিষ্কার পানি নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার। পানি যদি দূষিত হয়, তাহলে তা শুধু স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি নয়, এটি মৌলিক অধিকারেরও লঙ্ঘন।

উল্লেখ্য, ঢাকায় অনেক বাসিন্দা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন—ওয়াসার পানি থেকে দুর্গন্ধ আসে, পোকা উঠে এবং অনেক সময় পানি পুরোপুরি কালচে ও কাদাযুক্ত হয়। বিষয়টি গণমাধ্যমে বারবার আলোচনায় এসেছে।

আদালতের আদেশ অনুযায়ী, পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে দূষিত পানি সরবরাহ বন্ধে গৃহীত পদক্ষেপ, বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা—এসবের বিস্তারিত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে। এরপর রুলের চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা শহরের বাসিন্দারা প্রতিদিন যে পানি পান করছেন, তা যদি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে, তাহলে সেটি নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার প্রতীক। হাইকোর্টের এই নির্দেশনা এখন একটি আশার আলো। আদালতের হস্তক্ষেপের ফলে ওয়াসার সেবার মান পরিবর্তন হবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

No comments found


News Card Generator