close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

পরিবেশ সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পলিথিনে ঢেকে গেছে দেশের জলাশয়, নদীর তলদেশও ভরাট—জলবায়ু বিপর্যয়ে তরুণদের জেগে উঠতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এখনই ব্যবস্থা না নিলে সামনে ভয়ঙ্কর পরিণতি।..

আজ বুধবার রাজধানীতে পরিবেশ মেলা এবং জাতীয় বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে এক হৃদয়স্পর্শী ও সতর্কতামূলক বক্তব্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “জলাশয়গুলো এখন আর পানির আধার নয়—পলিথিন আর প্লাস্টিকের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আমাদের ভবিষ্যৎ অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে দাঁড়িয়ে আছে।”

ড. ইউনূস জানান, দেশের নদ-নদী ও খালবিলের তলদেশের মাটি খুঁড়লে ৪ থেকে ৫ ফুট নিচেও পলিথিন পাওয়া যাচ্ছে। এসব কৃত্রিম বর্জ্য এতটাই ভয়ঙ্কর যে, এটি বহু প্রজাতির প্রাণীর জীবনধারণকে বিপন্ন করে তুলেছে। তিনি বলেন, “এই পলিথিন আর প্লাস্টিকের জন্ম আছে, কিন্তু শেষ নেই। সুতরাং, এগুলোর ব্যবহার যত দ্রুত সম্ভব কমাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু সংকট দৈত্যাকারে আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। ও বলছে, ‘তুমি না আমি, একসঙ্গে নয়’। আমরা যদি সচেতন না হই, তাহলে হয় সে থাকবে না হয় আমরা—দুজন একসঙ্গে নয়।

ড. ইউনূস বিশেষভাবে দেশের তরুণ সমাজকে পরিবেশ ও জলবায়ু রক্ষার লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “তরুণরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারাই পারে জলবায়ু দুর্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে। শুধুমাত্র বৃক্ষরোপণ নয়, বরং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশবান্ধব জীবনাচার এবং সচেতনতামূলক আন্দোলনে তরুণদের জড়াতে হবে।”

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। তিনি জানান, সরকার পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য কঠোর কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, “শুধু কাগজে কলমে পরিকল্পনা যথেষ্ট নয়, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া বাস্তবিক পরিবর্তন সম্ভব না।”

প্রধান উপদেষ্টার মতে, পরিবেশের এই সংকট কেবল প্রকৃতি বা জীববৈচিত্র্যের জন্য নয়—বরং গোটা মানবজাতির টিকে থাকার প্রশ্ন। “আমরা আজ যেভাবে প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি, তা যেন আত্মহত্যারই আরেক রূপ,বলেন তিনি।

তিনি জাতির প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষকে আহ্বান জানান, “এখনই যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ না হই, তবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কেবল দূষিত বাতাস, বিষাক্ত পানি আর ফেলে আসা লাশময় প্রকৃতির উত্তরাধিকারী হবে।”

প্রধান উপদেষ্টার কথাগুলো কোনো ‘ভবিষ্যতের হুমকি’ নয়, বরং এটি একটি চলমান বিপর্যয়ের বাস্তব চিত্র। এখনই যদি রাষ্ট্র, সমাজ এবং জনগণ একসঙ্গে কাজ না করে, তবে আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের রেখে যাওয়া পৃথিবী হবে বিষাক্ত, বসবাসের অযোগ্য এক গ্রহ।

Ingen kommentarer fundet