প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকে আশার আলো দেখছে বিএনপি,মির্জা ফখরুল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আশাবাদী, আগামী ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। তিনি বল..

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচন ও সরকারের পুনর্গঠনের সম্ভাবনায় আলো দেখা যাচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক পরবর্তী সময়ে আমরা নির্বাচন নিয়ে আশার আলো দেখছি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, গত ১০ মাসে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে আমরা কিছুটা অনিশ্চয়তায় ভুগছিলাম, তবে এই বৈঠক আমাদের অত্যন্ত অনুপ্রাণিত ও আশ্বস্ত করেছে। এই বৈঠকে আন্দোলনের মূল দুটি পক্ষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে একমত পেয়েছে, যা নির্বাচনের পথে এক নতুন আশার সূচনা।

তিনি আরও জানান, “আমরা আশা রাখছি আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে একটি নির্বাচনের আয়োজন হবে, যা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করবে এবং জনগণের আশা পূরণ করবে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যেই অনেক ভালো কাজ শুরু করেছে। তারা আমাদের পথ দেখাচ্ছে এবং আমরা আশা করি, রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে একত্রিত হয়ে সহযোগিতা করবে।”

তিনি বলেন, “সংস্কারের পথে অনেক জটিল বিষয় রয়েছে। আমরা কিছু বিষয়ে একমত হয়েছি, যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। যেসব বিষয়ে মতভেদ রয়েছে, সেগুলো নিয়ে নির্বাচনের পর সংসদে বিস্তারিত আলোচনা হবে।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, “শুধু কথাবার্তা বা আলোচনার মাধ্যমে এই বিশাল রাজনৈতিক সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। বাস্তব পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।”

তিনি আরও জানান, “নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক নেতা এবং দলের তরুণ সদস্যদের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। তারা সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

আগামীকাল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার কথা রয়েছে, যা রাজনৈতিক পরিবেশে তরুণ নেতৃত্বের সম্ভাবনা বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। মির্জা ফখরুল বলেন, “এই তরুণদের নেতৃত্ব দেশের রাজনীতিকে নতুন মাত্রা দেবে।”

অনুষ্ঠানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সহ অন্যান্য নেতারা বক্তৃতা করেন। তারা সকলে একমত পোষণ করেন, রাজনৈতিক ঐক্য ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তরুণ নেতৃত্বের ভূমিকা অপরিহার্য।

গত কয়েক মাসের রাজনৈতিক উত্তেজনা ও আন্দোলনের মধ্যে বিএনপি-জোটসহ বিভিন্ন দল মূলত সরকারের চলমান সংস্কার কার্যক্রমের উপর নজর রাখছে। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা ইতিবাচক হলেও, রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ প্রয়োজন।

তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে আলোচনার নতুন সোপান তৈরি করেছে। এতে ভোটের শুদ্ধতা, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আশা দেখা দিয়েছে।

বিএনপির নেতৃত্ব বিশ্বাস ব্যক্ত করছে যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারবে। তবে রাজনৈতিক সংস্কার ও আলোচনার মাধ্যমে দ্বিধা দূর করা না গেলে দেশব্যাপী স্থায়িত্ব আসা কঠিন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে গত দশ মাসে নানা ঘাত-প্রতিঘাত ও আন্দোলন হয়। এসব সংকট কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দল একসঙ্গে কাজ করায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকাও ইতিবাচক আখ্যা পাচ্ছে।

বিএনপির নেতৃত্ব মনে করছে, আন্দোলন ও আলোচনা মিলিয়ে দেশ এক নতুন রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা পাবে। নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব ও তরুণ দলীয় কর্মীরা এই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে বলে আশাবাদী দলটি।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আলোচনার ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা দেশবাসীর কাছে ইতিবাচক বার্তা বয়ে আনে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রাজনৈতিক ঐক্য, তরুণ নেতৃত্বের বিকাশ এবং সরকারী সংস্কারের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। রাজনীতির এই জটিল প্রেক্ষাপটে জনগণের জন্য স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

No comments found


News Card Generator